জুলাই সনদের খসড়া চূড়ান্ত হওয়ার পর এর কয়েকটি দফা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে বিএনপি (BNP)। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ (Salahuddin Ahmed) অভিযোগ করেছেন, সনদের শুরুটা এবং ২, ৩ ও ৪ নম্বর দফার উপস্থাপনা যথাযথ হয়নি।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) সকালে গুলশানে নিজের বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে তিনি বলেন, “জুলাই সনদে কিছু বিষয় আলোচনায় না এলেও খসড়ায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আবার যেসব বিষয় আলোচনায় এসেছে, সেগুলোও সঠিকভাবে উপস্থাপিত হয়নি।” তিনি জানান, এসব ইস্যু দলীয়ভাবে পর্যালোচনা করে শিগগিরই কমিশনের কাছে আনুষ্ঠানিক মতামত জমা দেবে বিএনপি।
স্থায়ী কমিটির এ সদস্য আরও বলেন, জুলাই সনদের ৮৪ দফার মধ্যে যেসব বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্য হয়েছে, সেগুলোর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া এখনো পরিষ্কার নয়। একই সঙ্গে যেসব বিষয়ে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দেওয়া হয়েছে, সেগুলোরও সমাধানের পথ নির্ধারণ করা জরুরি। সংবিধান সংস্কারের বিষয়টিও আলোচনায় এসেছে, কিন্তু বাস্তবায়নের সুনির্দিষ্ট রূপরেখা খসড়ায় অনুপস্থিত।
তিনি অভিযোগ করেন, খসড়ায় গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গীকারই বাদ পড়েছে। আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল, সংবিধান সংশোধন ও অন্যান্য ঐকমত্যের বিষয়গুলো আগামী সংসদ গঠনের দুই বছরের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে। অথচ চূড়ান্ত খসড়ায় সে প্রতিশ্রুতি আর রাখা হয়নি।
সালাহউদ্দিন আহমদ আরও জানান, দ্বিতীয় দফার আলোচনার পর প্রণীত অঙ্গীকারনামায় জুলাই সনদকে সংবিধানের ঊর্ধ্বে স্থান দেওয়া হয়েছে—যা সাংবিধানিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। তাঁর ভাষায়, “কোনো নথিই সংবিধানের ওপরে হতে পারে না। এভাবে উদাহরণ স্থাপন করলে ভবিষ্যতের জন্য তা হবে ভয়ংকর দৃষ্টান্ত।” তিনি এটিও স্পষ্ট করেন যে, সনদ নিয়ে প্রশ্ন তোলা যাবে না—এমন ঘোষণা গণতান্ত্রিক চর্চার পরিপন্থী।
আসন্ন নির্বাচনের প্রসঙ্গে বিএনপির এ নেতা বলেন, “২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই জাতীয় নির্বাচন হবে। প্রধান উপদেষ্টা ইতোমধ্যেই নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছেন, আর কমিশনের প্রস্তুতিও প্রায় শেষ পর্যায়ে।” তিনি আরও জানান, সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক উপদেষ্টা নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে প্রকাশ্যে কথা বলেছেন। তাই বিএনপির কোনো সংশয় নেই। যদিও মাঠপর্যায়ে কেউ কেউ ভিন্ন সুরে মন্তব্য করছেন, সেটি রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হতে পারে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।