দিল্লিতে নতুন অফিসে সিআরআইয়ের হাল ধরলেন পুতুল, লক্ষ্য হাসিনার ক্ষমতায় ফেরা

আওয়ামী লীগের গবেষণা ও প্রযুক্তি-ভিত্তিক প্রচারণা সংস্থা সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন (সিআরআই) নিয়ে নতুন তথ্য সামনে এসেছে। জানা গেছে, ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-র মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল এখন সংস্থাটির প্রধান দায়িত্ব নিয়েছেন। নয়াদিল্লির অভিজাত লুটিয়েন্স বাংলো জোনের কাছাকাছি একটি দোতলা ভবনে তিনি নতুন অফিস চালু করেছেন। একই এলাকায় বসবাস করছেন শেখ হাসিনা, যিনি জুলাই মাসে গণ-অভ্যুত্থানের পর ভারতে আশ্রয় নেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলোর দাবি, নতুন অফিস থেকেই বাংলাদেশবিরোধী সাইবার কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকার, বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী এবং এনসিপির বিরুদ্ধে ধারাবাহিক প্রোপাগান্ডা চালানো হচ্ছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) দিয়ে তৈরি ভিডিও, বেনামি ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে এই প্রচারণা ছড়ানো হচ্ছে। উদ্দেশ্য স্পষ্ট—অন্তর্বর্তী সরকারকে অকার্যকর প্রমাণ করা, জাতীয় নির্বাচন ভণ্ডুল করা এবং গণ-অভ্যুত্থানের শক্তির মধ্যে বিভাজন তৈরি করা।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ২০১০ সালে সিআরআইয়ের কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথমে ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধু ভবনকে কেন্দ্র হিসেবে দেখানো হলেও, বাস্তবে বিভিন্ন গোপন জায়গা থেকে কার্যক্রম চালানো হতো। দীর্ঘদিন নেতৃত্বে ছিলেন শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, তবে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক হওয়ায় আইনগত জটিলতার কারণে এখন আর তিনি অফিসিয়ালি দায়িত্ব নিতে পারেন না। ফলে দায়িত্ব গেছে বোন পুতুলের হাতে।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১১ জুলাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় আঞ্চলিক কার্যালয়ের (এসইএআরও) পরিচালক পদ থেকে ছুটিতে পাঠানো হয় পুতুলকে। দুর্নীতি, জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে দুদক ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে। এ অবস্থায় দিল্লিতে বসেই তিনি নতুন করে সিআরআইয়ের কার্যক্রম শুরু করেছেন বলে জানা যায়।

সূত্র জানিয়েছে, দিল্লির অফিস থেকে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষকে আর্থিক সহায়তা দিয়ে নিয়োগ করা হচ্ছে। টকশো, সাংবাদিক, ইউটিউবার ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টদের কাজে লাগিয়ে সরকারবিরোধী প্রচারণা চালানো হচ্ছে। প্রজন্ম ৭১, মঞ্চ ৭১, ব্রিগেড ৭১, জয়বাংলা ব্রিগেডসহ শতাধিক ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেল এই প্রচারণা যুদ্ধে ব্যবহার হচ্ছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বর্তমানে সিআরআই আসলে আওয়ামী লীগের “গুজব তৈরির কারখানা” হিসেবে কাজ করছে। তাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য—বাংলাদেশে অস্থিরতা তৈরি করে শেখ হাসিনাকে আবারও ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনা।

সূত্র: দৈনিক যুগান্তর

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *