‘নুরের ওপর হামলায় জামায়াত জড়িত, নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্র করছে’

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর (Nurul Haque Nur)-এর ওপর হামলার পেছনে জামায়াতে ইসলামী জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আমানউল্লাহ আমান (Amanullah Aman)। তাঁর দাবি, জামায়াত পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) প্যারিস রোডে শাখা ছাত্রদলের আয়োজিত বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমান এই অভিযোগ তোলেন। ডাকসু নির্বাচনে শিবিরের প্রার্থিতার বিরুদ্ধে রিট করা এক নারী শিক্ষার্থীকে ‘গণধর্ষণের’ হুমকি, রাবি ছাত্রদল নেত্রীদের হেনস্তা এবং সারাদেশে নারী শিক্ষার্থীদের ওপর সাইবার বুলিংয়ের প্রতিবাদে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

আমানউল্লাহ আমান বক্তব্যে বলেন, “ছাত্রশিবিরের মূল সংগঠন জামায়াতে ইসলামী। তারা কোনোভাবেই এখন দেশে নির্বাচন চায় না। নির্বাচন বিলম্বিত করতে তারা সারা দেশে ইচ্ছাকৃতভাবে অরাজকতা তৈরি করছে, যাতে প্রমাণ করা যায় বাংলাদেশে নির্বাচনের পরিবেশ নেই।”

তিনি আরও অভিযোগ করেন, নুরুল হক নুরের ওপর হামলাসহ সাম্প্রতিক সময়ে যতগুলো ঘটনা ঘটেছে, সবগুলোতেই দুই পক্ষেই জামায়াতের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। তাঁর ভাষায়, “ভেতরে প্রবেশ করে একটি ষড়যন্ত্রমূলক পরিবেশ তৈরি করা হচ্ছে। উদ্দেশ্য একটাই—দেশবাসীকে বোঝানো যে এই পরিস্থিতিতে নির্বাচন সম্ভব নয়।”

প্রতিটি ঘটনার পর জামায়াত দায়িত্বশীল পর্যায় থেকে এমন মন্তব্য করে, যা সরাসরি নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে সন্দেহ তৈরি করে বলে দাবি করেন তিনি। “সুতরাং নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার যে খেলা চলছে, মানুষ তা বুঝে ফেলেছে,” যোগ করেন ছাত্রদল নেতা।

ডাকসু নির্বাচনে রিট করা ছাত্রীকে ‘গণধর্ষণের’ হুমকি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শিবির সবসময় দাবি করে তারা ‘চেইন অব কমান্ড’ মেনে চলে। তবে তাদের নেতাকর্মীরা যে নারী কর্মীকে হেনস্তা করেছে, সেটিও যদি তাদের চেইন অব কমান্ডের ভেতর হয়, তবে এটাই তাদের আদর্শিক অবস্থান বলে মন্তব্য করেন আমান।

এ সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন্ন রাকসু নির্বাচন নিয়েও তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁর অভিযোগ, “বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ইতিমধ্যেই জামায়াতীকরণ হয়ে গেছে। তারা একটিমাত্র সংগঠনকে বিজয়ী করার জন্য সব রকমের চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আবার রক্তাক্ত ইতিহাস ফেরানোর কোনো সুযোগ নেই, আমাদের শরীরে একবিন্দু রক্ত থাকতে আমরা তা প্রতিরোধ করব।”

বিক্ষোভ কর্মসূচির আগে ছাত্রদল একটি মিছিল বের করে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে আবার প্যারিস রোডে এসে শেষ হয়। এতে রাবি ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহী, সিনিয়র সহসভাপতি শাকিলুর রহমান সোহাগসহ বিভিন্ন পর্যায়ের শতাধিক নেতা-কর্মী অংশ নেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *