র্যাবের অপারেশনাল কর্মকাণ্ড, গোপন বন্দিশালা ও রাজনৈতিক বিরোধীদের দমন অভিযানের পেছনে সরাসরি তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)-র নির্দেশ ছিল বলে দাবি করেছেন সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন (Chowdhury Abdullah Al-Mamun)। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ রাজসাক্ষী হিসেবে দেওয়া জবানবন্দিতে মামুন এই অভিযোগ তুলেন।
ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন প্যানেলে মামুন বলেন, “র্যাব পরিচয়ে কাউকে অপহরণ করে হত্যার নির্দেশনা সরাসরি শেখ হাসিনার দপ্তর থেকে আসতো। র্যাবের কর্মকর্তা আলেপ উদ্দিন ও মহিউদ্দিন ফারুকি তার নির্দেশেই অপহরণ ও নির্যাতন চালাতেন।”
তিনি আরও বলেন, “২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগের রাতে ৫০ শতাংশ ব্যালট বাক্সে আগেই ভরে রাখার পরিকল্পনা শেখ হাসিনাকে দিয়েছিলেন তৎকালীন আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী (Javed Patwary)। সেই পরিকল্পনা মোতাবেকই নির্বাচন পরিচালিত হয়।”
মারণাস্ত্র ও গোপন বন্দিশালা
সাবেক এই আইজিপি জানান, “লেথাল উইপেন (মারণাস্ত্র) ব্যবহারের অনুমতি এসেছিল সরাসরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে। আর সেই অস্ত্র ব্যবহারে ছিলেন অতিউৎসাহী তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান হাবিব এবং গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) হারুন।”
তিনি উল্লেখ করেন, র্যাব-১ ইউনিটে ‘টিআইএফ’ নামক একটি গোপন বন্দিশালা চালু ছিল, যেখানে রাজনৈতিক ভিন্নমতাবলম্বী বা ‘সরকারের জন্য হুমকি’ এমন ব্যক্তিদের আটকে নির্যাতন করা হতো। মামুন জানান, র্যাবের অন্যান্য ইউনিটেও একই ধরনের গোপন বন্দিশালা ছিল।
পটভূমি ও প্রতিক্রিয়া
মামুন বর্তমানে একটি হত্যা মামলায় আসামি থেকে রাজসাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দিচ্ছেন। তার জবানবন্দিতে উঠে আসা এসব তথ্য রাজনীতিক ও মানবাধিকার মহলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। দীর্ঘদিন ধরে আলোচিত র্যাবের কর্মকাণ্ড এবার সরাসরি একজন সাবেক পুলিশ প্রধানের জবানবন্দির মাধ্যমে আদালতে স্থান পেল।