ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সরাতে কঠোর আন্দোলনের আশঙ্কা জাহেদ উর রহমানের

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস (Professor Dr. Muhammad Yunus)-এর বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলনের সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান (Zahed Ur Rahman)। তার মতে, ড. ইউনূস নির্বাচনের পক্ষে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন, আর এ কারণেই কিছু মহল তাকে ক্ষমতা থেকে সরানোর জন্য তৎপর হতে পারে।

বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) নিজের ইউটিউব চ্যানেল ‘জাহেদস টেক’-এ প্রকাশিত এক ভিডিওতে এ মন্তব্য করেন তিনি।

জাহেদ উর রহমান বলেন, “ড. ইউনূসকে সরানোর জন্য তার বিরুদ্ধে খুব কঠোর আন্দোলন শুরু হয়ে যেতে পারে। অন্তত বক্তৃতা-বিবৃতি তো চলবেই। এমন পরিস্থিতি তৈরি করা হতে পারে যাতে তিনি দায়িত্বে থাকতে না পারেন। কারণ হচ্ছে, তিনি অত্যন্ত কঠোরভাবে নির্বাচনের পক্ষ নিয়েছেন।”

তিনি আরও ব্যাখ্যা করেন, “এই দেশে যে কেউ নির্বাচনের পক্ষে দাঁড়াবে, সে কিছু লোকের চোখে শত্রুতে পরিণত হবে। তাকে নানা ফর্মে আক্রমণ করা হবে, পুরনো সমালোচনাগুলো নতুন করে সামনে আনা হবে। এগুলো ঘটবেই, কারণ ড. ইউনূস নির্বাচন নিয়ে খুব কঠোর অবস্থান নিয়েছেন।”

সম্প্রতি বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। বৈঠক শেষে তার দেওয়া নির্বাচনী অবস্থান স্পষ্ট বক্তব্যকে “দ্যাট ওয়াজ ভেরি টাফ” বলে অভিহিত করেন জাহেদ উর রহমান।

সরকারের সীমাবদ্ধতার দিক তুলে ধরে জাহেদ উর রহমান বলেন, “ড. ইউনূসের এই সরকারের প্রশাসনিক ব্যর্থতা আছে, কঠোরতার অভাব আছে, ম্যানেজমেন্টেও সমস্যা রয়েছে—এসব যৌক্তিক সমালোচনা আমরা দীর্ঘদিন ধরে করছি। তবে যত দিন তিনি থাকবেন, নির্বাচন বানচালের চেষ্টা সহজ হবে না। কারণ এখানে নানা খেলোয়াড় আছে। দেশি খেলোয়াড়রা ততটা সুবিধা করতে পারবে না, নির্বাচনের পক্ষে থাকা অংশের শক্তি অনেক বেশি।”

বিদেশি হস্তক্ষেপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বিদেশি খেলোয়াড়রাও যদি নির্বাচন বানচালের খেলায় নামতে চায়, ড. ইউনূস দায়িত্বে থাকলে তা মোকাবিলা করা তার জন্য সহজ হবে। অন্তত এই জায়গায় তিনি যথেষ্ট শক্তিশালী।”

নির্বাচন বানচালের পরিস্থিতি হলেও ড. ইউনূস দায়িত্ব ছাড়তে পারবেন না বলে মত দেন জাহেদ উর রহমান। তার ভাষায়, “তিনি দায়িত্বে থেকে বাংলাদেশের নির্বাচন দিয়ে একটি গণতান্ত্রিক সরকার রেখে তারপর বিদায় নেবেন। যদিও তিনি একবার পদত্যাগের প্রবণতা দেখিয়েছিলেন। যেহেতু তিনি খানিকটা নন-কনফ্রন্টেশনাল ধরনের মানুষ, তাই কারো কারো মনে আশা তৈরি হতে পারে। কিন্তু আগামি দিনে তার বিরুদ্ধে মারাত্মক আক্রমণ, বিদ্রুপ ও তুচ্ছতাচ্ছিল্য বাড়তে থাকবে। তাকে সরিয়ে তাদের পছন্দের কাউকে বসানোর চেষ্টা হতে পারে। সেনাপ্রধানকেও সরিয়ে ফেলার ইঙ্গিত থাকতে পারে। এতে দেশ একেবারে বিশৃঙ্খলা ও নৈরাজ্যের মধ্যে ঢুকে যেতে পারে।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *