খুলনায় গণ অধিকার পরিষদের মিছিল থেকে জাতীয় পার্টি অফিস ভাঙচুর, লুটপাট

আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল থেকে খুলনায় সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গণ অধিকার পরিষদের মিছিল শেষে নগরীর ডাকবাংলোয় অবস্থিত জাতীয় পার্টির (জাপা) অফিসে ভাঙচুর চালানো হয়। ঘটনার পর অফিস থেকে মালপত্র লুটপাটের অভিযোগও উঠেছে।

জাপার মহানগর সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ভাঙচুরের পাশাপাশি লুটপাটে প্রায় পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, হামলাকারীরা চেয়ার-টেবিল, কাগজপত্র, দরজা-জানালার গ্রিল থেকে শুরু করে অফিসের সাইনবোর্ডে ব্যবহৃত লোহালক্কড় পর্যন্ত নিয়ে গেছে। তবে আইনি পদক্ষেপের ব্যাপারে দ্বিধা প্রকাশ করে তিনি বলেন, “আমরা এখন নাজুক অবস্থায় আছি, দেখি কী করা যায়।”

ঘটনার পরপরই খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। সদর থানার ওসি হাওলাদার সানওয়ার হুসাইন মাসুম জানান, খবর পেয়ে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে পুলিশ সেখানে যায়। তিনি বলেন, “এ বিষয়ে মামলা হলে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

অন্যদিকে গণ অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা ভাঙচুর শেষে মিছিল নিয়ে ফেরিঘাট মোড়ে অবস্থান নেন এবং সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ চালান। তারা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের-এর প্রতিকৃতি পুড়িয়ে আন্দোলন শেষ করেন।

গণ অধিকার পরিষদের খুলনা মহানগর সাংগঠনিক সম্পাদক ফরহাদ হাসান রাজের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এদিন বিকেলে সংগঠনের সভাপতি ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর-এর ওপর হামলার বিচার, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ এবং জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবিতে মিছিল আয়োজন করা হয়। ওই মিছিল শেষে বিক্ষুব্ধ জনতা জাতীয় পার্টির অফিস গুঁড়িয়ে দেয়। সংগঠনের দাবি, অফিসের ভেতর থেকে রড, শাবল, চাপাতি, দা-সহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে তা সাংবাদিকদের সামনে প্রদর্শন করা হয়েছে।

বিক্ষোভ শেষে নেতাকর্মীরা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কুশপুতুল দাহ করেন। পাশাপাশি নুরুল হক নুরের ওপর হামলার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

উল্লেখ্য, গত ৩০ আগস্ট একই স্থানে গণ অধিকার পরিষদের কর্মীরা জাতীয় পার্টির অফিসে হামলার চেষ্টা করেছিলেন। তবে সেদিন পুলিশি বাধায় তারা ব্যর্থ হয়ে ফেরিঘাট মোড়ে অবস্থান নিয়ে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *