রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্লট দুর্নীতির মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)-র হয়ে নিজ খরচে আইনি সহায়তা দিতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন চার আইনজীবী। তবে তাদের আবেদন আদালত নামঞ্জুর করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকার ৪ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. রবিউল আলম এই আদেশ দেন। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম।
শেখ হাসিনার পক্ষে লড়তে ইচ্ছুক আইনজীবীরা হলেন— মোরশেদ হোসেন শাহীন, ইমরান হোসেন, শেখ ফরিদ ও মো. তপু। আবেদনে তারা উল্লেখ করেন, ন্যায়বিচার প্রাপ্তি এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তারা ব্যক্তিগতভাবে এই মামলায় তার আইনজীবী হতে চান।
মোরশেদ হোসেন শাহীন বলেন, “আমরা সম্পূর্ণ নিজ খরচে শেখ হাসিনার আইনজীবী হিসেবে নিয়োগের আবেদন করেছিলাম। কিন্তু আদালত তা প্রত্যাখ্যান করেছেন।” তিনি প্রশ্ন তোলেন, “ট্রাইব্যুনালসহ অন্যান্য আদালতে যদি শেখ হাসিনার পক্ষে লড়া যায়, তবে দুদকের মামলায় কেন তার পক্ষে আইনজীবী লড়তে পারবে না?”
শুনানির সময় বিচারক জানান, “আসামিকে আদালতে হাজির থাকতে হবে। কেবল তখনই দুদকের মামলায় তার পক্ষে আইনজীবীরা বক্তব্য রাখতে পারবেন। অন্যথায় তার পক্ষে আইনজীবী নিয়োগের সুযোগ নেই।”
এ বিষয়ে দুদকের প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম বলেন, “আসামি যদি পলাতক থাকেন, তাহলে তার হয়ে আইনজীবীর লড়ার সুযোগ নেই।”
এর আগে, গত জানুয়ারিতে প্লট বরাদ্দের দুর্নীতির অভিযোগে পৃথক ছয়টি মামলা দায়ের করে দুদক। এসব মামলার আসামির তালিকায় রয়েছেন শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ (পুতুল), বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকসহ আরও অনেকে। তারা সবাই বর্তমানে পলাতক, ফলে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি রয়েছে।
শেখ পরিবার ছাড়াও আসামির তালিকায় রয়েছেন জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) কাজী ওয়াছি উদ্দিন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, কবির আল আসাদ, তন্ময় দাস, মো. নুরুল ইসলাম, পরিকল্পনা বিভাগের সাবেক সদস্য মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, অবসরপ্রাপ্ত মেজর সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, পরিচালক শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, সরকারের সর্বোচ্চ পদে থাকা অবস্থায় শেখ হাসিনা ও তার পরিবার ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য না হয়েও পূর্বাচল আবাসন প্রকল্পের ২৭ নম্বর সেক্টরের ২০৩ নম্বর রোডে ছয়টি প্লট নিজেদের জন্য বরাদ্দ নিয়েছেন।