রাবিতে সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদল নেতার অভিযোগ—‘বামদের মধ্যেও শিবির অনুপ্রবেশ করেছে’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) সংবাদ সম্মেলনে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন আমানউল্লাহ আমান (Amanullah Aman), বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি দাবি করেছেন, “বামপন্থী রাজনীতির ভেতরেও শিবির ঢুকে গেছে” এবং বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার চেয়ে শিবিরের ভুয়া বট আইডি বেশি। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটে আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব মন্তব্য করেন।

অমানউল্লাহ আমান বলেন, “একটি এলাকায় যদি শিবিরের ১০ জন সদস্যও থাকে, তাদের সভাপতি কোনো পোস্ট দিলেই সেখানে ১০ হাজার কমেন্ট দেখা যায়। প্রশ্ন হচ্ছে—এই লোকগুলো কোথা থেকে আসে? জান্নাত থেকে, নাকি জাহান্নাম থেকে ছুটি নিয়ে?” তিনি শিবিরকে আড়াল থেকে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা না চালিয়ে নিজেদের প্রকৃত শক্তি প্রকাশের আহ্বান জানান। তার মতে, শিক্ষার্থীরা এখন আর এই ধরনের আড়ালভিত্তিক রাজনীতি গ্রহণ করছে না।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও জানান, কেন রাবির ছয়টি হলে ছাত্রী কমিটি গঠন করা হয়নি। এ প্রসঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগঠন পরিচালনায় একাধিক স্তর কাজ করে থাকে এবং এখানকার পরিস্থিতি দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভিন্ন। তার অভিযোগ, রাবির কিছু হল প্রভোস্ট ছাত্রীদের চাপ দিয়ে ইসলামী ছাত্রী সংস্থা গঠনে উৎসাহিত করছে, ফলে অনেক শিক্ষার্থী ছাত্রদলে যোগ দিতে সাহস পাচ্ছে না।

এদিকে সাম্প্রতিক এক ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জুলাই ৩৬ হলে রাত ১১টার পর প্রবেশের অভিযোগে ৯১ জন ছাত্রীকে ডেকে নিয়ে সতর্কতা জারি করেছিল হল প্রশাসন। ওই ঘটনাকে ঘিরে বিতর্কিত মন্তব্য করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ মখ্দুম হল শাখা ছাত্রদলের সহসভাপতি আনিসুর রহমান মিলন। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছাত্রীদের ফটোকার্ডের নিচে মন্তব্য করেন—“এগুলো ছাত্রী নয়, বিনা পারিশ্রমিক যৌনকর্মী।”

এ মন্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর শাখা ছাত্রদল তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়। সংগঠনটি প্রথমে সাংগঠনিক পদ স্থগিত করে দুই সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটির সদস্য ছিলেন শাখা ছাত্রদলের সিনিয়র সহসভাপতি শাকিলুর রহমান সোহাগ এবং সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফিক। তদন্ত প্রক্রিয়ায় দেখা যায়, অভিযুক্ত নেতা আনিসুর রহমান মিলন একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা সত্ত্বেও কোনো জবাব দেননি, বরং ফোন বন্ধ করে দেন। এতে প্রমাণিত হয়, কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যটি তিনি ইচ্ছাকৃতভাবেই করেছেন।

ফলে তাকে স্থায়ীভাবে সহসভাপতির পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। শুধু তাই নয়, বৃহস্পতিবার দুপুরে শাখা ছাত্রদলের পক্ষ থেকে মতিহার থানায় তার নামে মামলা দায়ের করা হয়। মামলার পরবর্তী সময়ে সংগঠনটি সংবাদ সম্মেলন করে, যেখানে আমানউল্লাহ আমান শিবির প্রসঙ্গে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *