বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ব্যর্থ হলে অনেক আন্দোলনকারী ফের ছাত্রলীগে ফিরে যেত—এমন মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী (Shamim Haider Patwary)। সম্প্রতি একটি টক শোতে অংশ নিয়ে তিনি এ বক্তব্য দেন।
শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, “আওয়ামী লীগের শাসনামলে নির্বাচন ব্যবস্থা এলোমেলো হয়ে গিয়েছিল, শিক্ষার্থীরা নিহত হচ্ছিল, ফলে মানুষ রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছিল। আন্দোলনকারী ছাত্ররা এখন বলে যে আমরা আন্দোলন না করলে ২৮ সাল পর্যন্ত বিএনপিকে অপেক্ষা করতে হতো। বিএনপি ও অন্যান্যরা মাঠে না নামলে আন্দোলন ব্যর্থ হতো। আর যদি ব্যর্থ হতো, তাহলে অনেকে আবার ছাত্রলীগে ফিরে যেত। তখন তারা বলত—আমরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন করেছি, এখন আমরা আবার ফিরে যাচ্ছি।”
ঐকমত্য কমিশন প্রসঙ্গেও তীব্র সমালোচনা করেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব। তাঁর ভাষ্য, আন্দোলনটি মূলত ছিল শেখ হাসিনাকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করা ও আওয়ামী লীগের পতন ঘটানো। কিন্তু পরে নানা জটিল ইস্যু—সংবিধান পরিবর্তন, গণপরিষদ ইত্যাদি যুক্ত করা হয়েছে, যা আন্দোলনকে কুটিল ও জটিল অবস্থায় ফেলেছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, “এই ঐকমত্য কমিশনের কাজ আসলে জটিলতা সৃষ্টি করা। এটা জটিলতা কমিশনে পরিণত হয়েছে।”
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকারের উচিত ছিল ছয় মাসের মধ্যে ভোট দেওয়া। কিন্তু এখন শান্তিপূর্ণ সমাধান বের করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তাঁর ভাষ্য, সংবিধানে তিন তিন ছয় মাসের কোনো ব্যতিক্রম নেই, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই নির্বাচন সম্পন্ন হওয়া উচিত। তিনি আরও যোগ করেন, “দেশটাকে যদি সিঙ্গাপুর বা মালয়েশিয়ার মতো উন্নত করা যেত, তাহলে ২০ বছর ক্ষমতায় থাকলেও সমস্যা ছিল না। কিন্তু দেশকে পাকিস্তান বা আফগানিস্তানের পথে ঠেলে দিলে, যখন মানুষ অসন্তুষ্ট, সুশাসন নেই, তখন ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন দেওয়াই ছিল সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ও নিরাপদ পথ।”
পরিস্থিতি এখন এতটাই জটিল হয়েছে যে শান্তিপূর্ণ উত্তরণ প্রায় অসম্ভব হয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন শামীম হায়দার। তিনি মনে করেন, এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য বিএনপি (BNP)-র ওপর বিরাট দায়িত্ব বর্তেছে। তাঁর মতে, বিএনপিকেই ইনক্লুসিভিটি, ফেয়ারনেস, ট্রানজিশন এবং ত্যাগের মাধ্যমে দেশকে রক্ষা করার পথ খুঁজে বের করতে হবে।