আসন্ন নতুন শিক্ষাবর্ষ ২০২৬ সাল থেকে আলিয়া মাদ্রাসার প্রথম থেকে দশম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে আসছে ব্যাপক পরিবর্তন। এর মাধ্যমে ২০১২ সালের কারিকুলাম পুনরায় ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি বেশ কিছু পরিমার্জন যোগ হচ্ছে। বিশেষভাবে, পাঠ্যবইয়ে যেসব স্থানে ছেলে বা মেয়ের ছবি রয়েছে, সেগুলোতে বাধ্যতামূলকভাবে হিজাব ও টুপি পরিহিত চিত্র যুক্ত করা হবে। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের নামেও আসছে পরিবর্তন—‘অনামিকা’ বা ‘মোনালিসা’র পরিবর্তে থাকবে ধর্মীয় নাম যেমন ‘ফাতেমা’, ‘আয়েশা’ কিংবা ‘খাদিজা’।
মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগ সরকারের টানা প্রায় ১৫ বছরের সময়ে পাঠ্যবইয়ে নানা পরিবর্তন আনা হয়েছিল। তবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে নতুন শিক্ষাবর্ষে পুরনো কাঠামো ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর ফলে আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা ২০১২ সালের কারিকুলাম অনুযায়ী পড়াশোনা করবে, যদিও সেটি আধুনিকায়নের মাধ্যমে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা হবে।
কারিকুলাম বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ৩৩টি মাদ্রাসাভিত্তিক বই পরিমার্জনের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডকে (এনসিটিবি – NCTB)। একইসঙ্গে জেনারেল বইগুলোকেও সংশোধনের সুপারিশ দেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, ২০২৬ সালে যে বইগুলো প্রকাশিত হবে সেগুলোতে ইসলামিক কৃষ্টি-সংস্কৃতিকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। আকাইদ-ফিকহ বই থেকে ‘মাজার’ বা শিরক সংশ্লিষ্ট বিষয় বাদ যাবে। এছাড়া মাদ্রাসার সাধারণ বইয়ে ‘ফ্যাসিবাদ’ সংক্রান্ত আলোচনাও সরিয়ে দেওয়া হবে। পরিবর্তে প্রাধান্য পাবে ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবের ইতিহাস।
মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের এক কারিকুলাম বিশেষজ্ঞের ভাষায়, “মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থায় ধর্মীয় বিষয়কে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হবে। পাশাপাশি সমসাময়িক বিষয়ও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। তবে শিক্ষার নিজস্বতা বজায় রেখেই আধুনিকায়ন করা হবে।”
এই প্রসঙ্গে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের প্রকাশনা নিয়ন্ত্রক ও কারিকুলাম বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এফ এম শাকিরুল্লাহ (FM Shakirullah) গণমাধ্যমকে বলেন, *“বোর্ড মূলত প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত বিষয় নিয়েই কাজ করে। নতুন শিক্ষাবর্ষ থেকে পুরোনো কারিকুলাম আবার চালু হচ্ছে। এর সঙ্গে পাঠ্যবইয়ে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন ও সংশোধনও এনসিটিবিকে জানানো হয়েছে।”