বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না আলোচিত ইসলামী বক্তা আমির হামজা (Amir Hamza)-র। সর্বশেষ তিনি দাবি করেছেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (Jahangirnagar University)-এর হলে নাকি সকালে মদ দিয়ে কুলি করা হয়—যা মুহূর্তেই দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় তোলে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও তাঁর এ বক্তব্যকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও মনগড়া বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।
এর আগেও একাধিক বিতর্কিত মন্তব্যে আলোচনায় এসেছিলেন হামজা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু নির্বাচনে শিবির-সমর্থিত প্যানেল জয়ী হওয়ার পর নওয়াব সলিমুল্লাহ হলে আজান দিতে দেওয়া হয় না বলে মন্তব্য করেছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, কোরআনের মাহফিলে বলিউড অভিনেত্রী রাশমিকা মান্দানার সৌন্দর্য বর্ণনা করায় সমালোচনার মুখে পড়েন। এসব আচরণে দেশের ধর্মভীরু মানুষদের একটি বড় অংশ বিরক্তি প্রকাশ করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, হামজা দাবি করেছিলেন তিনি নাকি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগে ভর্তি ছিলেন। অথচ এ বিভাগ চালু হয় ২০১১ সালে এবং সেই শিক্ষাবর্ষে প্রথমবার ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়। ফলে তাঁর দাবির কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই। তাছাড়া হলে মদ দিয়ে কুলি করার ঘটনা কিংবা শিক্ষকদের লাঠিপেটার অভিযোগকে প্রশাসন নজিরবিহীন ও কাল্পনিক আখ্যা দিয়েছে। তারা জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে সবসময় শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্ক সৌহার্দ্যপূর্ণ ছিল।
প্রশাসন আরও বলেছে, জাতীয় পর্যায়ের একটি প্রতিষ্ঠান নিয়ে এ ধরনের মনগড়া বক্তব্য কেবল অগ্রহণযোগ্য নয়, বরং দুঃখজনক। একইসঙ্গে হামজাকে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়।
এদিকে জামায়াতে ইসলামীও হামজার বক্তব্যের পর তাঁকে সতর্ক করেছে। সংগঠন থেকে তাঁকে জানানো হয়েছে, রাজনৈতিক বিতর্কিত কোনো বক্তব্য দেওয়া যাবে না। হামজা নিজেও বলেছেন, ‘দুইজন কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীল বলেছেন মাহফিলে কেবল কোরআনের তাফসির নিয়েই আলোচনা করব, অন্য কিছু নয়।’ নিজের ভুল স্বীকার করে তিনি আরও যোগ করেন, ‘সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের নাম বলতে গিয়ে ভুল করে মুহসিন হলের নাম বলে ফেলেছি। এ জন্য দুঃখিত। আগামীতে সতর্ক থাকব।’
এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ছাত্রদল প্রকাশ্যে ক্ষোভ জানিয়েছে এবং হামজাকে ক্ষমা চাইতে বলেছে। ছাত্রশিবিরের সাবেক ও বর্তমান নেতারাও তাঁর বক্তব্যে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। রাশমিকা মান্দানাকে ঘিরে দেওয়া পূর্ববর্তী মন্তব্য নিয়েও ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন তিনি। সর্বশেষ তিনি সকল বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।