হঠাৎ জামায়াত নেতাদের কথাবার্তায় আত্মম্ভরি ফুটে ওঠছে : মাসুদ কামাল

জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাসুদ কামাল বলেছেন, মানুষের মধ্যে একটা আলোচনা এখন আসছে। সেটা হলো- আগামী নির্বাচনে আসলে ক্ষমতায় আসবে কে? এ আলোচনাটা কিন্তু এতদিন ছিল না। এতদিন মানুষের মধ্যে একটা ধারণা ছিল, বিএনপি তো সহজেই চলে আসবে, বিএনপির আসন কত হবে, ২০০ এর চেয়ে কত বেশি হবে- এটা ছিল আলোচনার বিষয়বস্তু। কিন্তু এখন, বিশেষ করে ডাকসু এবং জাকসু নির্বাচনের পর এবং সারাদেশে প্রত্যন্ত অঞ্চলে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে বিএনপির নামধারী অথবা বিএনপির লোকজনদের মামলা বাণিজ্য, চাঁদাবাজি- এ সমস্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে পরিস্থিতি কি একটু চেঞ্জ হচ্ছে? এই প্রশ্নটা কিন্তু অনেকে করছেন।

জামায়াত এতদিন খুব বিনয়ের সঙ্গে রাজনীতি করতো। কিন্তু হঠাৎ করে জামায়াত নেতাদের কথাবার্তায় এক ধরনের আত্মম্ভরি, এক ধরনের গর্ব, এক ধরনের ক্ষমতায় যাওয়ার ব্যাপারে নিশ্চয়তা ফুটে ওঠছে।

রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) ‘কথা’ নামের নিজের ইউটিউব চ্যানেলে এসব কথা বলেন তিনি।

গত শুক্রবারের ঘটনা উল্লেখ করে মাসুদ কামাল বলেন, জামায়াত এর মধ্যে পাঁচ দফা দাবিতে সারাদেশে আন্দোলন করছে।

ঢাকায় করছে, বিভাগীয় পর্যায়ে করছে এবং তারপরে একদম প্রত্যন্ত অঞ্চলে অঞ্চলে উপজেলা পর্যায়ে তারা আন্দোলনটা করবে। বিভাগীয় পর্যায়ে যে আন্দোলনটা তারা করছিল, গত শুক্রবারে চট্টগ্রামে এ ধরনের একটা সভার আয়োজন করা হয়েছিল, আন্দরকিল্লা শাহি জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে জামায়াতের চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মুহাম্মাদ শাহজাহান বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর থেকে তরুণ ছাত্রসমাজ বার্তা দিয়েছে, বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদের যুগ থেকে গণতন্ত্রের যুগে পদার্পণ করেছে। এই ধারাবাহিকতায় আগামী জাতীয় নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী সরকার গঠনের মতো আসনে বিজয়ী হবে। জামায়াতে ইসলামী সরকারি দল হবে।

বিএনপিকে বিরোধী দলে যেতে হবে।

তিনি বলেন, এই ধরনের কথা এই প্রথমবার আমি শুনলাম। আপনারা প্রথমবার শুনলেন যে জামায়াতে ইসলামীর একজন নেতা দাবি করছেন, আগামীতে জামায়াতে ইসলামী সরকার গঠন করবে এবং বিএনপিকে বিরোধী দলে যেতে হবে। এই ঘোষণাটার নানা রকম ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ থাকতে পারে। এর মধ্যে দেখলাম বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতা সালাহউদ্দিন আহমদ সাহেব এটা নিয়ে কথা বলেছেন।

উনি বলেছেন যে ঠিক আছে, আপনারা যদি নির্বাচনে বিজয়ী হবেন, তাহলে নির্বাচনে আসছেন না কেন? কেন আপনারা গড়িমুশি করছেন? কেন নানা ছুতা আপনারা তুলে আনছেন যে এই কারণে যাব, এটা হলে যাব, সেটা হলে যাব। উনি একটু ইঙ্গিতপূর্ণ কথাই বলেছেন। তার জবাব জামায়াত কীভাবে দেবে- আমি বলতে পারব না।

তিনি আরো বলেন, এই যে কথাটা জামায়াত নেতাদের মুখ দিয়ে উচ্চারিত হলো, সেটা কি একেবারেই ফাঁকা হাওয়া অথবা ওই ভদ্রলোককে হঠাৎ করে অন্য কারো সঙ্গে কথা না বলে কথাটা বলেছেন? তার বক্তব্যটা কি জামায়াতে ইসলামী দল হিসাবে সমর্থন করে না? এই প্রশ্নটা কিন্তু জরুরি। অনেক সময় হয় যে, কোনো একটা নেতা বিচ্ছিন্নভাবে আবেগে আপ্লুত হয়ে কিছু একটা বলে বসে, তো এটা কি সে ধরনের কথা? এটা যে সে ধরনের কথা নয়, সেটা টের পাওয়া গেল তার পরের দিন শনিবার। এদিন রাজধানীর মগবাজারে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয় সংলগ্ন আল-ফালাহ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত দলটির কেন্দ্রীয় মহিলা বিভাগীয় মজলিশে শুরার অধিবেশনে জামায়াত আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের প্রভাব আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও পড়বে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *