রাজধানীর গুলশান থেকে শনিবার (৪ অক্টোবর) ভোরে গ্রেপ্তার হন ব্যারিস্টার আহসান হাবিব ভূঁইয়া (Ahsan Habib Bhuiyan)। সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের হওয়া একটি মামলায় দুপুরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়। শুনানি শেষে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আহসান হাবিব ভূঁইয়া আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক এবং দলটির নেতা এম এ সাত্তার ভূঁইয়ার ছেলে। তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি থানার কাবিলপুরে।
গুলশান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু বকর সিদ্দিক বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, গত ১৩ সেপ্টেম্বর সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা মামলার ভিত্তিতে শনিবার ভোরে গুলশানের ১১৮ নম্বর রোডের একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আদালতে পাঠানো হলে বিচারক কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন।
অন্যদিকে, গ্রেপ্তারের পর থেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তার আইনজীবী সারোয়ার হোসাইন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে তিনি অভিযোগ করেন, গ্রেপ্তারের পর থেকে একাধিকবার থানায় গেলেও তার মক্কেলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে দেওয়া হয়নি। এমনকি আটকের কারণও জানানো হয়নি, যা সংবিধান ও সিআরপিসির পরিপন্থী।
স্ট্যাটাসে তিনি প্রশ্ন তোলেন, “একজন ফেলো ব্যারিস্টারকে কি সত্যিই গভীর রাতে গ্রেপ্তার করতে হবে? তিনি কি এমন দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী বা ডাকাত ছিলেন? প্রকৃতপক্ষে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে তাকে। ক্ষমতাসীন সাবেক শ্বশুরের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরেই এই ঘটনা।”
আইনজীবী সারোয়ার আরও লেখেন, সকালে তিনি গুলশান থানায় গিয়ে আইনগত সহযোগিতা দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু ডিউটি অফিসার ও ওসি কেউই তাকে সাক্ষাতের অনুমতি দেননি। তিনি বলেন, “আইনজীবীর সাথে পরামর্শের অধিকার থেকে ব্যারিস্টার আহসান হাবিবকে বঞ্চিত করা হলো। এটাই আমাদের ব্যর্থ রাষ্ট্র ও পুলিশি রাষ্ট্রের চিত্র।”
তিনি আপিলেট ডিভিশনের নির্দেশনার কথা উল্লেখ করে বলেন, গ্রেপ্তারের পর একজন নাগরিকের আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শের সুযোগ দেওয়া পুলিশের আইনি দায়িত্ব। অথচ বাস্তবে পুলিশ রাজনৈতিক নির্দেশনাতেই চলে।
ক্ষোভ প্রকাশ করে সারোয়ার হোসাইন আরও লেখেন, “একজন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবীর ক্ষেত্রেই যদি এ অবস্থা হয়, তবে সাধারণ মানুষের অবস্থা সহজেই অনুমেয়। মিথ্যা মামলা ও মামলা বাণিজ্য এখন আগের চেয়েও বেড়েছে। একজন নাগরিক যেই মতেরই হোক, তার বিরুদ্ধে কেন মিথ্যা মামলা হবে? এই সংস্কৃতি থামাতেই হবে।”