বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের সব মিশন, হাইকমিশন ও দূতাবাসে রাষ্ট্রপতির ছবি পুনঃস্থাপনের দাবিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে একটি আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান। রবিবার (৫ অক্টোবর) রেজিস্ট্রি ডাকযোগে পাঠানো এই নোটিশে বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।
নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশের মিশন, হাইকমিশন ও দূতাবাসগুলোতে রাষ্ট্রপতির ছবি প্রদর্শন না করার নির্দেশ জারি করেছে। এই নির্দেশ জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছে, কারণ রাষ্ট্রপতির ছবি প্রদর্শন দীর্ঘদিনের রাষ্ট্রীয় প্রথা ও সরকারি প্রোটোকলের অংশ হিসেবে বিবেচিত।
নোটিশে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৪৮(২)-এ স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে—‘রাষ্ট্রপতি হইবেন রাষ্ট্রের প্রধান এবং তিনি রাষ্ট্রের সব ব্যক্তির ওপর অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত হইবেন।’ তাই রাষ্ট্রপতির ছবি অপসারণ বা প্রদর্শনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা সংবিধান পরিপন্থি, রাষ্ট্রীয় প্রোটোকল লঙ্ঘনকারী এবং রাষ্ট্রপ্রধানের পদমর্যাদার অবমাননাস্বরূপ।
আইনি নোটিশে অভিযোগ করা হয়েছে যে, এই নির্দেশের ফলে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে। রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ না করা পর্যন্ত, অপসারিত না হওয়া পর্যন্ত বা সাংবিধানিক মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি দেশের বৈধ রাষ্ট্রপ্রধান—এই বাস্তবতা অগ্রাহ্য করা যায় না।
রাষ্ট্রপতির ছবি অবিলম্বে পুনঃস্থাপনের আহ্বান জানিয়ে নোটিশে বলা হয়েছে, বিদেশে অবস্থিত সব বাংলাদেশ মিশন, হাইকমিশন ও দূতাবাসে রাষ্ট্রপতির ছবি পুনঃস্থাপন করতে হবে। পাশাপাশি, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, যিনি প্রধানমন্ত্রীর মর্যাদাসম্পন্ন, তার ছবিও রাষ্ট্রপতির ছবির সঙ্গে প্রদর্শনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
নোটিশে সময়সীমা নির্ধারণ করে আরও বলা হয়েছে, নোটিশ পাওয়ার ১০ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রপতির ছবি পুনঃস্থাপন না করা হলে, দেশের ভাবমূর্তি রক্ষার স্বার্থে এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে জনস্বার্থে রিট দায়ের করা হবে।