বিএনপি তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন নিয়ে ব্যস্ত, জামায়াত ভাবছে ইসলামী বিপ্লব হয়েছে—গোলাম মাওলা রনি

রাজনীতির অস্থির প্রেক্ষাপটে গোলাম মাওলা রনি (Golam Maula Rony) মন্তব্য করেছেন, বিএনপি এখন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান (Tarique Rahman) কবে দেশে ফিরবেন, সেই অপেক্ষায় ব্যস্ত। অন্যদিকে, জামায়াতে ইসলামী (Jamaat-e-Islami) নিজেদের ‘ইসলামী বিপ্লব’-এর মধ্যেই দেখে বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

রবিবার নিজের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত এক ভিডিওতে গোলাম মাওলা রনি এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “বিপ্লবের পর যারা এই বিপ্লবের নায়ক ছিলেন, তারা আমাদের কাছে যেন আবাবিল পাখির মতো ছিলেন। তারা যেখানে যেতেন, সেখানে সব কিছু তাদের নিয়ন্ত্রণে চলে যেত। তারা যখন ডাক দিতেন, রাজুতে আয়—অমনি হাজার হাজার ছেলে-মেয়ে রাজুতে ছুটে যেত। অনেকটা হ্যামিলিয়নের বাঁশিওয়ালার মতো। কিন্তু সেই ইতিহাস তিন মাসের বেশি টিকল না।”

রনি জানান, দুর্নীতি, নিয়োগ বাণিজ্য ও চাঁদাবাজির কারণে সেই বিপ্লবী ইতিহাস টেকেনি। এরপর দেশে শুরু হয় নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের হিড়িক। তিনি বলেন, “একটার পর একটা কিংস পার্টি হচ্ছে। যারা এগুলো গঠন করছেন, তারা ভাবছেন ক্ষমতায় চলে আসবেন, মন্ত্রী হবেন বা এমপি হবেন। কিন্তু দুই মাস না যেতেই দেখা গেল, একটি কিংস পার্টিরও কোনো অস্তিত্ব নেই।”

বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর বর্তমান অবস্থা নিয়েও মন্তব্য করেন রনি। জাতীয় পার্টির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “জাতীয় পার্টির অবস্থা এখন বলা কঠিন। রওশন এরশাদ, জি এম কাদেরসহ দলটির বিভিন্ন অংশের নেতারা নিজেরাই ভালো জানেন—দল এখন কোন অবস্থায় আছে, আর ভবিষ্যৎ কী।”

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর জামায়াতের রাজনীতি নিয়ে তিনি তীব্র ব্যঙ্গ করে বলেন, “এক বছর ধরে জামায়াতের যে হুম্বিতম্বি চলছে, তাতে মনে হয় বাংলাদেশে যেন এক ইসলামী বিপ্লব হয়ে গেছে। এখন তারা ঠিক করতে পারছে না, এই ইসলামী বিপ্লবটা কি ইরানের ধাঁচে হবে, নাকি আফগানিস্তানের রাষ্ট্রব্যবস্থায়, না কি সৌদি আরবের মতো শরিয়া আইনে চলবে।”

অন্যদিকে, বিএনপির বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, “বিএনপির নেতাকর্মীরা এখন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান কবে দেশে ফিরবেন, সেই আলোচনা নিয়েই মগ্ন।”

আওয়ামী লীগের রাজনীতি প্রসঙ্গে রনি বলেন, “আওয়ামী লীগের রাজনীতি এখন দুই খুচরা দিকের ওপর দাঁড়িয়ে আছে—একটা হলো ঝটিকার মিছিল, আরেকটা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণা। বড় বড় নেতারা এখন ফেসবুকে অ্যাক্টিভ হয়ে গেছেন। আট-নয় মাস আগে যাদের কোনো অস্তিত্ব ছিল না, এখন তাদের সবারই দুই-তিনটা আইডি আছে। সেখান থেকে তারা বলছেন—আমরা আসছি, আপা আসছেন, কয়েক সপ্তাহের মধ্যে দেখা হবে।”

রনির এই বক্তব্যে ফুটে উঠেছে বর্তমান রাজনীতির বিশৃঙ্খল চিত্র—যেখানে বিএনপি অপেক্ষায়, জামায়াত বিভ্রান্ত, আর আওয়ামী লীগ সীমিত এক প্রচারযুদ্ধে ব্যস্ত।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *