আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি আমরা নিশ্চিতভাবে জিতব : ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তারেক রহমান

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল—বিএনপি (Bangladesh Nationalist Party)-এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান (Tarique Rahman) জানিয়েছেন, তিনি শিগগিরই দেশে ফিরবেন এবং আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেবেন। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস (Financial Times)-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, “আমরা নিশ্চিতভাবে জিতব। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এককভাবে সরকার গঠনের অবস্থানে আমরা আছি। আমি মনে করি, আমার দেশে ফেরার সময় ঘনিয়ে এসেছে।” তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার পতনের পর বিএনপি বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয়ের পথে রয়েছে এবং দেশ পরিচালনার জন্য দলটি প্রস্তুত। তাঁর ভাষায়, “দেশে একটি মুক্ত ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেই ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান পূর্ণতা পাবে।”

সাক্ষাৎকারে তারেক রহমান আরও বলেন, শেখ হাসিনার পতনের পর নতুন সরকারকে দুর্বল অর্থনীতি, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কে ক্ষতিগ্রস্ত পোশাক খাত এবং ভারতের সঙ্গে টানাপোড়েনের মুখোমুখি হতে হবে।

আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে তাঁরই প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি বলে তিনি ইঙ্গিত দেন। তিনি বলেন, “মুহাম্মদ ইউনূস (Muhammad Yunus)-এর বক্তব্যের প্রতিধ্বনি করেই বলছি, আওয়ামী লীগ একটি ফ্যাসিস্ট দল। বিএনপি অন্যান্য রাজনৈতিক দল এবং গত বছরের ছাত্র আন্দোলন থেকে গঠিত নতুন রাজনৈতিক গোষ্ঠীর সঙ্গে একত্রে সরকার গঠনে প্রস্তুত।”

ছাত্রনেতৃত্বাধীন এনসিপি সম্পর্কে তারেক রহমান বলেন, “আমরা তাদের রাজনীতিতে স্বাগত জানাব। তারা তরুণ, ভবিষ্যৎ তাদেরই।”

অর্থনৈতিক পরিকল্পনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ শুধু পোশাক রপ্তানির ওপর নির্ভর না করে আমাজন, ই-বে ও আলিবাবার মতো অনলাইন খুচরা বিক্রেতাদের সরবরাহকেন্দ্র হতে পারে।”

পররাষ্ট্রনীতিতে অবস্থান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, “আমরা ভারতের সঙ্গে ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ নীতি অনুসরণ করব, যা শেখ হাসিনার সময়কার একপেশে সম্পর্ককে পুনর্গঠন করবে।”

দলীয় অতীত নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “যেকোনো সরকারেরই কিছু ত্রুটি থাকতে পারে, কিন্তু বিএনপিই বাংলাদেশে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) গঠন করেছিল।”
এ বিষয়ে তিনি আরো বলেন, “বাংলাদেশি গণমাধ্যমে ছড়ানো ভুয়া বর্ণনাই ওই মার্কিন তারবার্তার ভিত্তি তৈরি করেছিল, এবং আমার বিরুদ্ধে করা সব মামলা এখন প্রত্যাহার হয়েছে।”

প্রতিশোধের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তারেক রহমান বলেন, “নতুন বিএনপি সরকার প্রতিশোধের চক্র ভাঙবে। ইতিমধ্যেই ৫ আগস্টের পর থেকে প্রতিশোধে জড়িত সাত হাজার সদস্যকে শাস্তি বা বহিষ্কার করা হয়েছে।”

তবে আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে ফেরার সুযোগ দেওয়া হবে কি না—এই প্রশ্নে তিনি সরাসরি উত্তর না দিয়ে তিনি বলেন, “যদি তাঁরা দোষী সাব্যস্ত হন, তাহলে আওয়ামী লীগ কীভাবে নির্বাচনে অংশ নেবে?”

তিনি আরও বলেন, নির্বাচিত হলে বিদেশে পাচার করা অর্থ পুনরুদ্ধারে ইউনূস সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ অব্যাহত রাখবেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *