শরিকদের আবদার মেটাতে গেলে এবারের নির্বাচনেও অংশগ্রহণ করা হবে না বিএনপি’র!!!

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে বিএনপি (Bangladesh Nationalist Party) এখন গভীর রাজনৈতিক সমন্বয়ের সময় পার করছে। যুগপৎ আন্দোলনে থাকা বেশ কয়েকটি দল ইতোমধ্যে বিএনপির কাছে প্রার্থী চেয়ে তাদের আসন ছাড়ের তালিকা জমা দিয়েছে। সব দলের দাবিকৃত আসন যোগ করলে সংখ্যা দাঁড়ায় দুই শতাধিক। অথচ এখনো আরও কিছু কৌশলগত দল রয়েছে, যারা আপাতত ৩০০ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করলেও শেষ পর্যন্ত বিএনপির সঙ্গে এক হয়ে ভোটে অংশ নিতে চায়। যদি তারাও আসন ছাড়ের তালিকা পাঠায়, তাহলে মোট চাহিদা তিন শতাধিক ছাড়িয়ে যাবে—ফলে বিএনপির জন্য কার্যত কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না।

রাজনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, ভোটের আগে আসন ভাগাভাগি নিয়ে সমমনাদের সঙ্গে চলমান আলোচনা নিয়ে বিএনপি এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। ইতোমধ্যে সমমনা কয়েকটি দল ও জোট বিএনপির কাছে দুই শতাধিক আসন দাবি করেছে। তবে কে কতটি আসন পাবে, তা নিয়ে এখন চলছে দরকষাকষি ও জোর আলোচনার পালা। ঘোষিত সময় অনুযায়ী, আগামী ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি অনুষ্ঠিত হবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আর নভেম্বরের মাঝামাঝি ঘোষণা হবে নির্বাচনের তফসিল। তার আগেই প্রার্থী নির্ধারণ ও রাজনৈতিক কৌশল চূড়ান্ত করতে মরিয়া সব দল।

বিএনপি চায় তফসিল ঘোষণার আগেই আসন ভাগাভাগি ও জোট সমন্বয়ের কাজ শেষ করতে। এ লক্ষ্যে সম্প্রতি দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী সংস্থা—জাতীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। বৈঠকে সমমনাদের জন্য প্রায় ৫০টি আসন ছাড়ার চিন্তা করছে দলটি। একই সঙ্গে দলের মনোনয়ন প্রক্রিয়াও দ্রুত চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী মাসের মধ্যেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে চায় বিএনপি। প্রার্থী নির্ধারণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান (Tarique Rahman)-কে।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, যুগপৎ আন্দোলনে যুক্ত কয়েকটি দল ইতোমধ্যে ২১৭টি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা জমা দিয়েছে বিএনপির কাছে। এর মধ্যে গণতন্ত্র মঞ্চ ১৩৮, ১২ দলীয় জোট ২১, এগারো দলীয় জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট ৯, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) ১৩, জাতীয় পার্টি (বিজেপি) ৫, গণফোরাম ১৫, লেবার পার্টি ৬ এবং জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম) ১০টি আসনে তাদের প্রার্থীর নাম দিয়েছে।

রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হিসেবে কিছু দল সরাসরি লন্ডনে দেখা করে তারেক রহমানের হাতে সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা তুলে দিয়েছে। ফলে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটে এখন চলছে আসন ভাগাভাগি নিয়ে তীব্র দরকষাকষি ও অভ্যন্তরীণ আলোচনা।

এদিকে, বিএনপির কাছে তালিকা পাঠানো দলগুলোর বাইরেও আরও কিছু রাজনৈতিক গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগাযোগ ও আলোচনায় রয়েছে দলটি। এর মধ্যে আছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ এবং আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি)। যদি এই দলগুলোও শেষ পর্যন্ত বিএনপির সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভোটে অংশ নেয় এবং আসন ছাড়ের তালিকা দেয়, তাহলে দেখা যাবে আসন ভাগাভাগির এই সমীকরণে বিএনপির জন্য আর তেমন কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না।

আসন ওয়ারী বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে , তারেক রহমান, মির্জা ফখরুল, সালাউদ্দিন আহমেদের মতো নেতাদের আসনেও এক বা একাধিক দলের পক্ষ থেকে প্রার্থীর নাম জমা দেওয়া হয়েছে। অবস্থা এখন এমন শরিকদের আবদার মেটাতে গেলে বিএনপিকে এবার এই ত্রয়োদশ নির্বাচনে, নির্বাচনের বাইরেই থাকতে হবে !!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *