মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump)-কে ‘শান্তির মানুষ’ এবং ‘বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় নেতা’ বলে প্রশংসা করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ (Shehbaz Sharif)। সোমবার মিশরের শার্ম আল শেখে অনুষ্ঠিত গাজা বিষয়ক শীর্ষ সম্মেলনে ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন।
সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে শাহবাজ শরিফ বলেন, ‘আজকের দিনটি আধুনিক ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ দিন। কারণ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অক্লান্ত প্রচেষ্টার ফলেই শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তিনি সত্যিকার অর্থে একজন শান্তির দূত। গত এক মাসজুড়ে তিনি নিরলসভাবে কাজ করেছেন যেন পৃথিবীটা শান্তি ও সমৃদ্ধির জায়গা হয়ে ওঠে।’
এরপরই ট্রাম্পকে আবারও নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করার ঘোষণা দেন পাকিস্তানের এই প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমি স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, পাকিস্তান এর আগেও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেছিল, কারণ তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ থামানোর অসাধারণ উদ্যোগ নিয়েছিলেন এবং যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করেছিলেন। আজ আবারও আমি এই মহান প্রেসিডেন্টকে নোবেলের জন্য প্রস্তাব করছি, কারণ আমার বিশ্বাস—তিনি সবচেয়ে যোগ্য ও অসাধারণ প্রার্থী।’
এর আগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু (Benjamin Netanyahu) এবং দেশটির পার্লামেন্টও ট্রাম্পকে একই পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন দেয়। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এই মনোনয়ন নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অন্যদিকে, ২০২৫ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার জয় করেছেন ভেনেজুয়েলার গণতন্ত্রকামী নেত্রী মারিয়া কোরিনা মাচাদো (María Corina Machado)। পুরস্কার হাতে পাওয়ার পর তিনি এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘আমি এই পুরস্কার উৎসর্গ করছি ভেনেজুয়েলার ভুক্তভোগী জনগণ এবং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে, যিনি আমাদের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা দিয়েছেন।’
পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া আরেক পোস্টে মাচাদো লেখেন, ‘আমরা এখন বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে, আর এই মুহূর্তে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ, লাতিন আমেরিকার মানুষ এবং বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলোই আমাদের প্রধান সহযোগী—স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের এই লড়াইয়ে।’
ট্রাম্প নিজেও সাংবাদিকদের জানান, নোবেল জয়ী মাচাদো তাকে ফোন করে বলেছেন, আসলে এই পুরস্কার তারই প্রাপ্য। ট্রাম্প বলেন, ‘যিনি পুরস্কার পেয়েছেন, তিনি আজ আমাকে ফোন করে বললেন, “আমি এই পুরস্কার তোমার সম্মানে নিচ্ছি, কারণ আসলে তুমিই এর যোগ্য।” এটা সত্যিই এক সুন্দর মুহূর্ত।’
রসিকতার ভঙ্গিতে তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমি তাকে বলিনি যে, তাহলে পুরস্কারটা আমাকেই দাও। তবে আমার মনে হয়, চাইলে হয়তো তিনি দিতেন। তিনি খুবই ভদ্র ও উদার একজন মানুষ।’
নোবেল কমিটি পুরস্কার ঘোষণার সময় জানিয়েছিল, এই বছরের শান্তি পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে ‘সাহসী স্বাধীনতার রক্ষকদের’, যারা কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের পক্ষে লড়াই করে গেছেন।