‘জুলাই সনদের কিছু বিষয় আমাদের মধ্যে সংশয় তৈরি করেছে’—এনসিপি সদস্যসচিব আখতার হোসেন

জাতীয় নাগরিক পার্টির (NCP) সদস্যসচিব আখতার হোসেন অভিযোগ করেছেন, জুলাই সনদে ‘নোট অব ডিসেন্ট’-এর বিষয়গুলো এখনও পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা করা হয়নি। তাঁর মতে, এই ‘নোট অব ডিসেন্ট’-এর একটি সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞা প্রয়োজন, এবং যেভাবে সেগুলো বাস্তবায়ন করা হবে, তার একটি স্পষ্ট পথনকশা থাকা জরুরি।

বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক ‘অতি জরুরি’ বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সভাপতি ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, আর সভাপতিত্ব করেন কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ

আখতার হোসেন বলেন, “শেষ মুহূর্তে কিছু বিষয় আমাদের মধ্যে সংশয় তৈরি করেছে। জাতিকে অস্পষ্ট রেখে কোনো উদ্যোগ সফল করা সম্ভব নয়। আজকের এই দিনে আমরা এমন এক অবস্থানে পৌঁছেছি, যেখানে বাংলাদেশে আর কখনো ফ্যাসিবাদ ফিরে আসবে না। দেশের গণতন্ত্র যেন জবাবদিহিতাপূর্ণ পথে এগিয়ে যেতে পারে, সেই লক্ষ্যেই ঐকমত্য কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলো এক অভূতপূর্ব সহনশীল আলোচনার মধ্য দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি, তা দীর্ঘ সময়ের আলোচনার ফল। বাস্তবায়নের যে প্রক্রিয়া নিয়ে আমরা এক বছর ধরে আলোচনা করছি, সেখানে কোনো সুস্পষ্ট বিকৃতি ঘটেনি। আমরা প্রস্তাব দিয়েছি, এটি যেন একটি ‘আদেশ’ আকারে বাস্তবায়িত হয়। যদি সেটি সাংবিধানিক আদেশ নামে নামকরণ করা হয়, তাহলে তা অধিক গ্রহণযোগ্য হবে।”

এনসিপির সদস্যসচিব আরও জানান, “আমরা প্রস্তাব দিয়েছি—এই উদ্যোগটির নাম হোক ‘জুলাই আদেশ’ বা ‘সাংবিধানিক সংস্কার আদেশ’। নাম যাই হোক, আমরা এটি বাস্তবায়নের জন্য অঙ্গীকারবদ্ধ। আমরা মনে করি, মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস—যিনি সরকারের প্রধান—তিনিই এই আদেশ জারি করবেন। জনগণের মধ্য দিয়ে যে অভিপ্রায় ইতিমধ্যে প্রতিফলিত হয়েছে, সেটিকে বাস্তবে রূপ দিতে তিনিই এই পদক্ষেপ নেবেন, আমরা সে আশাই রাখি।”

তিনি আরও যোগ করেন, “আমরা যেসব রাজনৈতিক দল ঐকমত্যে পৌঁছেছি, সেই গণভোটের বিষয়টি এখনও পরিষ্কার নয়। গণভোটের দিন-তারিখসহ বিস্তারিত বিষয়গুলো জাতির সামনে স্পষ্ট করা প্রয়োজন।”

শেষে আখতার হোসেন বলেন, “আমরা সংবিধানের মৌলিক বিষয়গুলোতে যেসব পরিবর্তনের প্রস্তাব করেছি, তা শুধু সংশোধনের মাধ্যমে স্থায়ী হবে না—এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত। তাই মৌলিক সাংবিধানিক সংস্কারে স্বাক্ষর হওয়ার পরই পরবর্তী নির্বাচিত প্রতিনিধিরা ক্ষমতার অধিকারী হবেন। সংসদ সদস্যরা ‘কনস্টিটিউয়েন্ট পাওয়ার’-এর দায়িত্ব পালন করবেন—এ বিষয়েও স্পষ্টতা প্রয়োজন।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *