হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (Hazrat Shahjalal International Airport)-এর কার্গো সেকশনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (Mirza Fakhrul Islam Alamgir)। শনিবার (১৮ অক্টোবর) রাতে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি এই অগ্নিকাণ্ডকে ‘পূর্বপরিকল্পিত’ বলে আখ্যায়িত করে বলেন, জনগণ বিশ্বাস করে দেশকে অস্থিতিশীল করতেই একের পর এক আগুন লাগানো হচ্ছে।
বিএনপি মহাসচিব তাঁর বিবৃতিতে বলেন, “ছাত্র-জনতার আকাঙ্ক্ষার বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে এবং দেশে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে নানা ধরনের সহিংসতা চালাচ্ছে ফ্যাসিস্টদের দোসররা। এ ধরনের অপকর্ম মোকাবিলায় দেশের মানুষকে এখনই সজাগ ও সতর্ক হতে হবে। কারণ দেশীয় ও আন্তর্জাতিক শত্রুরা আজও সক্রিয় রয়েছে।”
ফখরুল আরও বলেন, “শুধু আজকের বিমানবন্দরের আগুন নয়, সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটে যাওয়া একাধিক অগ্নিকাণ্ড একই সূত্রে গাঁথা। এগুলো পূর্বপরিকল্পিত, এবং জনগণ সে বিশ্বাসই করে।”
তিনি উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন ৫ আগস্ট ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানকে, যেখানে হাজারো শহীদ ও ছাত্র জনতার আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে দেশ স্বৈরাচারমুক্ত হয়েছিল। কিন্তু সেই অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই নানা চক্রান্ত চলছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “স্বৈরাচারের অংশীদাররা এখনো গণঅভ্যুত্থানের সাফল্য ও সম্ভাবনাকে ধ্বংস করতে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। কিন্তু বাংলাদেশের পক্ষের শক্তি সতর্ক থাকলে, দেশকে আর কখনো অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া যাবে না।”
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “ষড়যন্ত্র কিংবা অপপ্রচার চালিয়ে গত ১৬ বছরের অনাচার ও দুর্নীতির ইতিহাস চাপা দেওয়া যাবে না। জনগণ তা ভুলে যাবে, এমন আশাও করতে পারবে না কেউ।”
বিমানবন্দর অগ্নিকাণ্ডের দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করে ফখরুল বলেন, “প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। পাশাপাশি আহতদের দ্রুত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে।”
উল্লেখ্য, শনিবার দুপুরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো সেকশনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পাঁচ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও আগুন সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
এই ঘটনার আগে, গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম ইপিজেডের একটি কারখানায় টানা ১৭ ঘণ্টা ধরে আগুন জ্বলেছে। একই দিনে রাতে টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে একটি সূতার মিলে আগুনে কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। তারও আগে, ১৪ অক্টোবর মিরপুর রূপনগরে কেমিক্যাল গোডাউন ও একটি পোশাক কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারান ১৬ জন।
ফখরুল এসব ঘটনার প্রেক্ষাপটে জরুরি ভিত্তিতে দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।