চট্টগ্রাম বন্দরে ১২০০ টন সিরামিক শিল্পের কাঁচামাল বহনকারী একটি লাইটারেজ জাহাজ ডুবে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বঙ্গোপসাগর ও কর্ণফুলী নদীর মোহনায়, বন্দরের সীমানার ভেতরে যান্ত্রিক ত্রুটির কবলে পড়ে জাহাজটি প্রায় সম্পূর্ণরূপে ডুবে যায়। যদিও দুর্ঘটনাস্থলটি বন্দরের মূল চ্যানেলের কাছাকাছি, তবু আপাতত জাহাজ চলাচলে কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়নি বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।
বন্দর সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার রাত ৮টার দিকে ‘এমভি জায়ান’ (MV Zayan) নামে লাইটারেজ জাহাজটির স্টিয়ারিং ফেইল করে এবং একই সঙ্গে ইঞ্জিনেও ত্রুটি দেখা দেয়। তখন জাহাজটি স্থির রাখা হয়। পরদিন শনিবার সকালে সেটিকে তীরের দিকে টেনে আনার চেষ্টা করা হলে পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতের কাছাকাছি এলাকায় এটি হঠাৎ অর্ধেকেরও বেশি ডুবে যায়।
বন্দরের সচিব ওমর ফারুক (Omar Faruk) জানান, বন্দরের বহির্নোঙর থেকে প্রায় ১২০০ টন ‘বল ক্লে’ নামের সিরামিক কাঁচামাল খালাস করে জাহাজটি ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল। কিন্তু মাঝপথে ত্রুটির কারণে ডুবে যাওয়ায় সেই সব পণ্য সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়ে গেছে। তবে তিনি আশ্বস্ত করেন, বন্দর চ্যানেলে অন্যান্য জাহাজের চলাচলে কোনো বাধা সৃষ্টি হয়নি।
জাহাজটির মালিক সংস্থা জায়ান শিপিং লাইন্স (Zayan Shipping Lines)-এর অপারেশন অফিসার কাজী মোহাম্মদ শিবলু বলেন, “জাহাজে স্টিয়ারিং ফেইল করার পর ইঞ্জিনও বন্ধ হয়ে যায়। আমরা সেটি স্থির রাখার চেষ্টা করি। কিন্তু সকালে তীরে আনতে গেলে জাহাজটির ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায় এবং এক পর্যায়ে সেটি ডুবে যায়।” তিনি আরও জানান, দুর্ঘটনার সময় জাহাজে থাকা ১৩ নাবিকই নিরাপদে তীরে ফিরেছেন।
এদিকে লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়ন (Lighterage Workers Union)-এর সচিব এম এ রনি জানান, জাহাজটি নেভাল একাডেমির কাছাকাছি এলাকায় আসার পর চরে আটকে তলা ফেটে যায়। এর ফলে নিচের দিক দিয়ে তিনটি হ্যাচ দিয়ে দ্রুত পানি প্রবেশ করতে থাকে, এবং শেষ পর্যন্ত প্রায় ৯০ শতাংশ অংশ ডুবে যায়।
এই দুর্ঘটনায় কোনো প্রাণহানি না ঘটলেও, বিপুল পরিমাণ কাঁচামাল হারিয়ে গেছে, যা সংশ্লিষ্ট শিল্পকারখানাগুলোর উৎপাদনে প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন শিল্প সংশ্লিষ্টরা। এখন বন্দর কর্তৃপক্ষ ও জাহাজমালিক প্রতিষ্ঠানটি মিলে উদ্ধার কার্যক্রম ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে।