জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট অসম্ভব—সরাসরি বার্তা দিলেন মির্জা ফখরুল

জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক অঙ্গনে যখন নানা আলোচনা-সমালোচনা তুঙ্গে, তখন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (Mirza Fakhrul Islam Alamgir) স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন—নির্বাচনের আগে কোনো গণভোটের সম্ভাবনা নেই।

আজ (৩১ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি (Jatiya Samajtantrik Dal-JSD)-র ৫৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। জেএসডির সহ-সভাপতি তানিয়া রবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী, ভাসানী জনশক্তি পার্টির শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, এবি পার্টির মজিবুর রহমান মঞ্জু এবং জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন।

সম্প্রতি জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে সমমনা ৮টি রাজনৈতিক দল নির্বাচন পূর্ব গণভোটের দাবি জানিয়ে আন্দোলনে নেমেছে। তাদের দাবির প্রেক্ষিতে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই, জাতীয় নির্বাচনের আগে কোনো ধরনের গণভোটের সুযোগ নেই। ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, সেখানে একই দিনে দুটি ভোট হবে—একটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য, অপরটি গণভোটের জন্য।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন বানচাল করতে একটি মহল সক্রিয়ভাবে ষড়যন্ত্র করছে। জনগণকে বিভ্রান্ত করতে নানা বক্তব্য দিচ্ছে। কিন্তু আমরা বলেছি, এই নির্বাচনের দিনই গণভোট অনুষ্ঠিত হবে—তাতে কোনো দ্বিমত থাকার সুযোগ নেই।’

আন্দোলনরত দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা অতীতে জনগণকে বহুবার বিভ্রান্ত করেছেন, ১৯৭১ সালেও বিরোধিতা করেছেন। দয়া করে এবার আর জনগণের আকাঙ্ক্ষার বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেন না। এই দেশের মানুষ বিশ্বাসঘাতকদের কখনো ক্ষমা করে না। তাই নির্বাচনকে সামনে রেখে আসুন সবাই অংশগ্রহণ করুন।’

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘নির্বাচনের মধ্য দিয়েই জনগণের মতামত ও ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটুক—আমরা সেই চেষ্টাই করছি। একটা সত্যিকারের জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।’

এ সময় তিনি বলেন, ‘আমরা নির্বাচন করব এবং এরপরই একটি জাতীয় সরকার গঠন করব। দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে যেসব মিত্রদের সঙ্গে আমরা আন্দোলন করেছি, তাদের নিয়েই সরকার গঠনের পরিকল্পনা আমাদের। আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট—এটা কোনো ব্যক্তি বা দলের সরকার নয়, বরং জাতীয় ঐক্যের সরকার হবে।’

আলোচনা সভায় বিএনপির সংস্কার প্রশ্নে দলের অবস্থানও স্পষ্ট করেন মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে যেসব সংস্কার হয়েছে, সেগুলোর সূচনা বিএনপির হাত ধরেই। আমরাই ৩১ দফা সংস্কারের রূপরেখা দিয়েছি, যা নিয়ে অন্যান্য রাজনৈতিক দলও একমত হয়ে সনদে স্বাক্ষর করেছে।’

তিনি জানান, ক্ষমতায় এলে দল যেসব সংস্কারে একমত হয়েছে, তা বাস্তবায়ন করা হবে এবং যেগুলো করা সম্ভব হয়নি, তা দলের ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত করে বাস্তবায়ন করা হবে।

এ সময় তিনি আ স ম আবদুর রব (ASM Abdur Rob)-এর আশু রোগমুক্তিও কামনা করেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *