জামায়াতে ইসলামী প্রতিশোধ ও প্রতিহিংসার রাজনীতি করে না; করলে দেশের অবস্থা বধ্যভূমিতে পরিণত হতো—এমনটাই মন্তব্য করেছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান (Dr. Shafiqul Rahman)। আজ বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) রাতে সিলেট (Sylhet) নগরের একটি কনভেনসন সেন্টারে জামায়াতে ইসলামী (Jamaat-e-Islami) আয়োজিত সুধী সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
সমাবেশে দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়ীার (এহসানুল মাহবুব জুবায়ের (Ehsanul Mahbub Zubayer))সহ স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য দেন। জামায়াতের আমির বলেন, দল ও ধর্মের ভিত্তিতে দেশকে আর বিভক্ত করা যাবে না। নির্বাচনে জয়-পরাজয় যাই হোক না কেন, সব ইসলামী ও দেশপ্রেমিক দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে আগামীতে পথ চলবে জামায়াত।
ডা. শফিকুর রহমান আরও বলেন, রাজকীয় মনোভাব নিয়ে রাজনীতি করতে হয়—উজাড় করে দিতে হয়। কিন্তু দেশের রাজনীতিকরা নির্বাচিত হয়ে গেলে ইবাদতকেও খাজনায় পরিণত করে ফেলেন। তিনি অসৎ রাজনীতিকদের ওপর আঙুল তুলেই দাবি করেন, নিজেদের স্বার্থে কিছু অসাধু রাজনীতিক পুলিশকে অপরাধে জড়িয়েছেন। তবু দেশ চালাতে পুলিশ প্রয়োজনই—এমন কথাও বলেন তিনি—একটি নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
সমাবেশে জামায়াত আমির দাবি করেন, আওয়ামী লীগ আমলে সাধারণভাবে কথা বলার স্বাধীনতা ছিল না; যখন-তখন যে কেউ অদৃশ্য হয়ে যেত। বারবার জামায়াতকে নির্মূলের হুমকি দেয়া হয়েছে, নেতাকর্মীরা নিজেদের বাড়ি-ঘরে থাকতে পারেনি—এসব কথাও তিনি তুলে ধরেন। তিনি জানান, যদি জামায়াত সরকার গঠন করে তাহলে সরকারি জামায়াত এমপিরা সরকারি বাড়তি সুবিধা গ্রহণ করবেন না; বিনা ট্যাক্সে গাড়ি নেবেন না জামায়াতের নির্বাচিত এমপিরা—এই প্রতিশ্রুতিও দেন তিনি।
সুধী সমাবেশে বক্তারা বলেন, গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারে যারা নোট অব ডিসেন্ট বা আপত্তি জানিয়েছেন, তারা আসলে কি চান—তারা এটা স্পষ্ট করতে হবে। তাদের বক্তব্য, গণভোটসহ প্রস্তাবিত দাবি যদি মানা না হয় তাহলে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কঠিন রূপ নিতে পারে—এমন হুঁশিয়ারিও দেন বক্তারা। তারা আরও বলেন, সংস্কারের আইনগত ভিত্তি না থাকলে নির্বাচন ফলপ্রসূ হবে না এবং ফ্যাসিবাদের পুনরাগমন সম্ভাবনা তৈরি হবে। তবে, তারা জোর দিয়ে বলেন, জামায়াতে ইসলামী তার নেতাকর্মীদের মাধ্যমে কাউকে এই সুযোগ দেবে না।
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতা-কর্মীরা উপস্থিত থেকে তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করেন এবং দলের অবস্থান সমর্থন করেন। অনুষ্ঠানের ভেতরে প্রকাশিত উদ্বেগ ও সাবধানবার্তা থেকে স্পষ্ট—জামায়াত রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিতে নিজেদের পথ এবং রাজনৈতিক নীতিবোধ স্পষ্টভাবে রক্ষা করতে দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।


