নির্বাচন কমিশন (Election Commission) কর্তৃক ঘোষিত আসন পুনর্নির্ধারণ সংক্রান্ত গেজেট আংশিকভাবে বাতিল করে দিয়েছে হাইকোর্ট (High Court)। সোমবার এক রায়ে আদালত ঘোষণা করে, বাগেরহাটে চারটি এবং গাজীপুরে পাঁচটি সংসদীয় আসনই বহাল থাকবে।
এই আদেশে নির্বাচন কমিশনের ৩০ জুলাই ও ৪ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত গেজেটকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে, যেখানে বাগেরহাটের চারটি আসন কমিয়ে তিনটি এবং গাজীপুরের পাঁচটি আসন বাড়িয়ে ছয়টি নির্ধারণ করা হয়েছিল।
বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকার ও বিচারপতি ফয়সল হাসান আরিফের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ পৃথক দুটি রিট আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি শেষে এই রায় ঘোষণা করেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন।
ব্যারিস্টার জাকির বলেন, “স্বাধীনতার পর থেকে বাগেরহাটে কখনো তিনটি আসন ছিল না, সবসময় চারটি ছিল। কিন্তু ৩০ জুলাই ইসি এক খসড়া প্রজ্ঞাপন জারি করে বাগেরহাটের একটি আসন কেটে দেয়, যা সম্পূর্ণ অন্যায় ছিল। আমরা আপত্তি জানাই, এরপর শুনানি শেষে গেজেট প্রকাশ হলেও আসন কাটার সিদ্ধান্ত বহাল রাখা হয়। এই অন্যায়ের বিরুদ্ধেই হাইকোর্টে রিট করি।”
একই রায়ের মাধ্যমে গাজীপুরেও ইসির আসন সংখ্যা বৃদ্ধি সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়। ফলে সেখানে আগের মতোই পাঁচটি আসন বহাল থাকবে।
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ বলেন, “আমরা সোমবার সন্ধ্যার পর হাইকোর্টের রায়ের বিষয়ে জানতে পেরেছি। পুরো রায়ের অনুলিপি হাতে পেলে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।”
হাইকোর্ট বেঞ্চের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ মেহেদী হাসান জানান, রুল যথাযথ ঘোষণা করে আদালত ইসির নতুন গেজেটকে অবৈধ ঘোষণা করেছেন। এর ফলে বাগেরহাটে চারটি ও গাজীপুরে পাঁচটি আসনই বহাল থাকবে।
এর আগে গত ১৬ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট রুল জারি করে জানতে চায়, কেন বাগেরহাটের চারটি আসন বহাল রাখতে নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং কেন নির্বাচন কমিশনের গেজেটকে অবৈধ ঘোষণা করা হবে না। সংশ্লিষ্টদের ১০ দিনের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৬৯ সাল থেকেই বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসনে নির্বাচন হয়ে আসছিল।
– বাগেরহাট-১ চিতলমারী-মোল্লাহাট-ফকিরহাট
– বাগেরহাট-২: বাগেরহাট সদর-কচুয়া
– বাগেরহাট-৩: রামপাল-মোংলা
– বাগেরহাট-৪:** মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ৩০ জুলাই ইসি তিনশ’ আসনের সীমানা নির্ধারণ করে খসড়া প্রকাশ করে। সেখান থেকে দাবি-আপত্তি শুনানি শেষে ৪ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়, যেখানে ১৪টি আসনে ৪২টি পরিবর্তনের পাশাপাশি বাগেরহাটের একটি আসন কমানো এবং গাজীপুরের একটি বাড়ানো হয়।
তবে আদালতের রায়ে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, এমন সীমানা পরিবর্তন জনস্বার্থবিরোধী ও সংবিধানপরিপন্থী।


