আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী ১৮ নভেম্বর কমিশন উদ্বোধন করতে যাচ্ছে ‘প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন অ্যাপ’। এই উপলক্ষে প্রবাসী ভোটারদের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, শর্ত ও জমাদানের পদ্ধতি সংবলিত একটি বিস্তারিত পরিপত্র জারি করেছে ইসি।
ইসির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের পরিচালক (নিবন্ধন ও প্রবাসী) খানআবি শাহানুর খান স্বাক্ষরিত পরিপত্রটি জারি হয় গত সোমবার।
পরিপত্রে বলা হয়েছে, প্রবাসী ভোটার নিবন্ধনের জন্য অনলাইনে পূরণকৃত আবেদনপত্র (ফরম ২ক), ভেরিফায়েড জন্ম নিবন্ধন সনদের কপি, বৈধ বা মেয়াদোত্তীর্ণ বাংলাদেশি পাসপোর্ট, বিদেশি পাসপোর্ট অথবা সংশ্লিষ্ট দেশে বসবাসকারী তিনজন বাংলাদেশি এনআইডিধারীর স্বাক্ষরিত নাগরিকত্ব প্রত্যয়নপত্র আবশ্যক।
এছাড়া আবেদনকারীর পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি), জন্ম বা মৃত্যু সনদ (যথাযথ ক্ষেত্রে), পাসপোর্ট, ওয়ারিশ সনদ বা নাগরিকত্ব সনদ এবং একটি রঙিন পাসপোর্ট সাইজ ছবি জমা দিতে হবে।
প্রযোজ্য ক্ষেত্রে শিক্ষা সনদ (এসএসসি/জেএসসি/পিইসি), নিকাহনামা, স্বামী/স্ত্রীর এনআইডি, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ প্রদত্ত নাগরিকত্ব সনদ (যেমন কাউন্সিলর, চেয়ারম্যান, মেয়র, সিইও, প্রশাসক) এবং প্রবাসীর ঠিকানাসংবলিত ইউটিলিটি বিল বা হোল্ডিং ট্যাক্স রশিদ দাখিলের নির্দেশনা রয়েছে।
বিশেষ করে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষিত বিশেষ এলাকার (চট্টগ্রাম বিভাগের ৫৬ উপজেলা/থানা) নাগরিকদের জন্য আলাদা তথ্য ফরম পূরণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
নিবন্ধনের ক্ষেত্রে আবেদনকারীদের নিজ নিজ দেশের বাংলাদেশ দূতাবাস বা মিশন অফিসে সরাসরি উপস্থিত হয়ে নির্ধারিত তারিখে সব আবশ্যকীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে এবং বায়োমেট্রিকস (ছবি, ১০ আঙুলের ছাপ, আইরিশ স্ক্যান ও স্বাক্ষর) প্রদান করতে হবে।
যদি প্রবাসী আবেদনকারী সরাসরি জমা দিতে অপারগ হন, তবে তার পক্ষে বাংলাদেশে অবস্থানরত প্রতিনিধি সংশ্লিষ্ট উপজেলা বা থানা নির্বাচন অফিসারের কাছে প্রয়োজনীয় দলিলাদি জমা দিতে পারবেন।
এছাড়া নিবন্ধনের জন্য আবেদন ফরমে (ফরম ২ক) দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট ভোটার এলাকার উপজেলা বা থানার নির্বাচন অফিসার সরেজমিন তদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করবেন, যা নিবন্ধনের জন্য বাধ্যতামূলক বলে পরিপত্রে জানানো হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের এই পদক্ষেপ প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির পথ সহজ করবে বলে মনে করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসীরা ভোটাধিকার প্রাপ্তির দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন, এবার সেই দাবির প্রাতিষ্ঠানিক বাস্তবায়ন শুরু হলো বলেই বিশ্লেষকদের অভিমত।


