জামায়াতের সাথে পাটোয়ারীর সংহতি প্রকাশ নিয়ে এনসিপিতে বিভ্রান্তি, দায় নিতে রাজি নয় দল

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-র প্রধান সমন্বয়কারী নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারী সম্প্রতি জামায়াত-নেতৃত্বাধীন আট দলীয় জোটের পাঁচ দফা দাবির আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে মন্তব্য করেন, যার মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান কর্মসূচির হুঁশিয়ারিও ছিল। এনসিপির পক্ষ থেকে এ মন্তব্য দলীয় অবস্থান কিনা, তা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।

দুই সিনিয়র এনসিপি নেতা জানিয়েছেন, পাটোয়ারীর এই মন্তব্য তাঁর ব্যক্তিগত মতামত, কোনো আনুষ্ঠানিক দলীয় সিদ্ধান্ত নয়। যদিও এনসিপির পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি।

একটি জনসভায় পাটোয়ারী বলেছিলেন, “জামায়াত ও মিত্রদের দাবিগুলো যৌক্তিক ও ন্যায্য। যদি সরকার দমন-পীড়নের পথ বেছে নেয়, তাহলে আমরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রাস্তায় ঐক্যবদ্ধ থাকব।”

তবে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদিব পরিষ্কারভাবে জানান, এটি এনসিপির আনুষ্ঠানিক অবস্থান নয়। তাঁর ভাষায়, “জামায়াত জুলাই সনদ ও তার আইনি বাস্তবায়নের কথা বলছে। এ ব্যাপারে আমাদের সীমিত সংহতি আছে। তবে আমরা তাদের বৃহত্তর রাজপথ কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছি না।”

আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরা শারমিন বলেন, “আমাদের সংহতি কেবল সনদ সংশ্লিষ্ট দাবির প্রতি। জামায়াতের অন্যান্য রাজনৈতিক দাবির সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই।”

উল্লেখ্য, জামায়াতে ইসলামি ও তাদের সাত মিত্র দল রবিবার (১৬ নভেম্বর) থেকে যমুনার সামনে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান ধর্মঘট শুরু করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। তারা জানিয়েছে, জুলাই সনদ বাস্তবায়নসহ পাঁচ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে।

এই প্রেক্ষাপটে এনসিপি নেতাদের বিপরীতমুখী বক্তব্যে দলের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। একদিকে পাটোয়ারীর সরাসরি সংহতি ঘোষণা, অন্যদিকে দলীয় শীর্ষ নেতাদের সংযত বক্তব্য—এসব মিলিয়ে এনসিপি অভ্যন্তরে মতবিভেদ স্পষ্ট হয়ে উঠছে।

তবে এবিষয়ে গভীর রাতে ফেসবুকে আরেক পোস্টে পাটোয়ারী বলেন, আজ ৮টি দল জুলাই সনদের দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে পল্টনে সমাবেশ শুরু করেছে, আমরা তাদের সঙ্গে সংহতি জানাতে বলেছি “তাদের দাবি ন্যায্য ও যৌক্তিক। আমরা তাদের সঙ্গে আছি। তারা যেন এটা বাস্তবায়ন করে ঘরে ফেরে।”
এই সংহতি কোনো নির্দিষ্ট দলের রাজনৈতিক অবস্থানের প্রতি সমর্থন নয়। বরং জুলাই সনদের বাস্তবায়নের প্রতি আমাদের ধারাবাহিক অঙ্গীকারেরই অংশ। আমরা কোনভাবেই চাই না সংস্কারের যে ঐতিহাসিক সুযোগ এসেছে তা ব্যর্থ হোক।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *