ডেনমার্কে বাংলাদেশের নতুন রাষ্ট্রদূত হচ্ছেন ঢাবি উপাচার্য ড. নিয়াজ আহমেদ খান

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র ১৫ মাস পরই নতুন এক অধ্যায়ে প্রবেশ করতে যাচ্ছেন ড. নিয়াজ আহমেদ খান। এবার তাকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ডেনমার্ক (Denmark)-এর পরবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে।

সরকারি সূত্রে জানা গেছে, কোপেনহেগেনে (Copenhagen) বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যেই একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে, যেখানে ড. নিয়াজকে রাষ্ট্রদূত হিসেবে গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে। এখন কেবল ডেনিশ সরকারের ক্লিয়ারেন্স পাওয়া বাকি। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে এক থেকে তিন মাস সময় লাগতে পারে বলেই জানা গেছে।

তবে শুধু ড. নিয়াজ আহমেদ খান নন, আরও কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তির নামও আলোচনায় এসেছে সম্ভাব্য রাষ্ট্রদূত হিসেবে। তাদের মধ্যে রয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDG) বিষয়ক দূত লামিয়া মোর্শেদ (Lamia Morshed), আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক বিশেষ দূত লুতফে সিদ্দিকী (Lutfey Siddiqi) এবং তার বোন হুসনা সিদ্দিকী (Husna Siddiqi)।

রাষ্ট্রদূত নিয়োগে নতুন সমীকরণ

ড. নিয়াজ আহমেদ খানের ক্ষেত্রে নিয়োগের আনুষ্ঠানিকতা প্রায় শেষ হলেও বাকি তিনজনকে নিয়ে এখনো আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (Ministry of Foreign Affairs)। জানা গেছে, সিঙ্গাপুর, হেগ, থিম্পু, ইয়াঙ্গুন এবং তেহরানসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক স্টেশনে রাষ্ট্রদূত বা হাইকমিশনারের পদ শূন্য হতে যাচ্ছে শিগগিরই।

আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা লুতফে সিদ্দিকী সিঙ্গাপুরে, আর তার বোন হুসনা সিদ্দিকী হেগে রাষ্ট্রদূত পদে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। অপরদিকে, লামিয়া মোর্শেদ ইউরোপের কোনো দেশে দায়িত্ব নিতে ইচ্ছুক হলেও বর্তমানে উপযুক্ত কোনো পদ খালি নেই বলে জানা গেছে।

তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এসব নিয়োগ নিয়ে আলোচনা চললেও এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক ফাইলওয়ার্ক শুরু হয়নি।

সমালোচনার মুখে পেশাদার কূটনীতিকরা

এই সম্ভাব্য নিয়োগ তালিকা প্রকাশের পর থেকেই কূটনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কারণ, এই তালিকায় রয়েছেন এমন কিছু ব্যক্তি যারা পেশাগতভাবে কূটনীতির সঙ্গে যুক্ত নন। ফলে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞ কূটনীতিকদের ক্যারিয়ারের গুরুত্বপূর্ণ সময়টিতে তাদের সুযোগ হারানোর আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বিশেষ করে লুতফে সিদ্দিকী ও হুসনা সিদ্দিকীর পরিবার ঘিরে সমালোচনা আরও তীব্র হয়েছে। তাদের বাবা আবু ইয়াহইয়া বুরহানুল ইসলাম সিদ্দিকী, যিনি শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)-এর আগের আমলে পুলিশের আইজি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন, তাঁর প্রভাবও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে।

সরকারি সূত্রে জানা গেছে, যোগ্যতা ও পেশাগত অভিজ্ঞতা বিবেচনায় নয়, বরং ব্যক্তিগত সম্পর্ক ও রাজনৈতিক প্রভাবের ভিত্তিতেই এ ধরনের নিয়োগের প্রক্রিয়া নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। এতে পেশাদার কূটনীতিকদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ উভয়ই বাড়ছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *