বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর (Bangladesh Jamaat-e-Islami) সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান (Rafiqul Islam Khan) বলেছেন, তার দল রাষ্ট্রক্ষমতায় গেলে কাদিয়ানিদের আনুষ্ঠানিকভাবে অমুসলিম ঘোষণা করা হবে। এই বিষয়ে দেশে বা মুসলিম বিশ্বের কোথাও কোনো মতভেদ নেই বলেও জোর দিয়ে জানান তিনি।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক খতমে নবুওয়ত মহাসম্মেলনে একথা বলেন রফিকুল ইসলাম খান। কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণার দাবি ঘিরে এই মহাসম্মেলনে জমায়েত হয়েছিল দেশের শীর্ষ ইসলামি চিন্তাবিদ ও বিভিন্ন দেশের আলেমদের এক বিরল সমাবেশ।
রফিকুল ইসলাম বলেন, “এই সমাবেশে শুধু বাংলাদেশের মুসলমানই নয়, গোটা মুসলিম বিশ্বের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত রয়েছেন। কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা করা নিয়ে কারও ভিন্নমত নেই। এটা এককথায় মুসলিম উম্মাহর ঐকমত্য।”
তিনি আরও বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বহু হাদিসে নিজেকে শেষ নবী হিসেবে ঘোষণা করেছেন। এই বিশ্বাসই মুসলিম উম্মাহর অন্যতম আকিদা। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের জনগণ যদি আমাদেরকে নির্বাচিত করে, তাহলে আমরা ইনশাআল্লাহ কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা করব।”
সম্মেলনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও আলেমরা অংশগ্রহণ করেন। উপস্থিত ছিলেন—বিএনপি-র স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম, জামায়াতের রফিকুল ইসলাম খান, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির মাওলানা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক এবং বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি আবদুল মালেক।
সম্মেলনের বিদেশি অতিথিদের তালিকায় ছিলেন—জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম পাকিস্তান-এর সভাপতি মাওলানা ফজলুর রহমান, জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ (ভারত)-এর সভাপতি মাওলানা সাইয়্যিদ মাহমুদ মাদানি, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া পাকিস্তান-এর মহাসচিব মাওলানা হানিফ জালন্দরি, ইন্টারন্যাশনাল খতমে নবুওয়ত মুভমেন্টের ওয়ার্ল্ড নায়েবে আমির শায়খ আব্দুর রউফ মক্কি, ইউসুফ বিন্নুরী টাউন মাদ্রাসার নায়েবে মুহতামিম ড. আহমাদ ইউসুফ বিন্নুরী, পাকিস্তানের মাওলানা ইলিয়াছ গুম্মান এবং মিসরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শায়খ মুসআব নাবীল ইবরাহিম।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত পরিষদের আহ্বায়ক ও খতমে নবুওয়ত সংরক্ষণ কমিটি বাংলাদেশের আমির, মধুপুরের পীর মাওলানা আবদুল হামিদ। আয়োজক ছিল সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত পরিষদ এবং তত্ত্বাবধানে ছিল খতমে নবুওয়ত সংরক্ষণ কমিটি বাংলাদেশ। এই সম্মেলন ঘিরে ধর্মীয় আবেগ যেমন ছিল, তেমনি ছিল ধর্মভিত্তিক রাজনীতির প্রতিশ্রুতি ও প্রতিজ্ঞা।


