শেষ মুহূর্তের অবিশ্বাস্য নাটকীয়তা, ভুল, সংশোধন—সব মিলিয়ে দোহার স্টেডিয়ামে যেন এক রোলারকোস্টার ম্যাচই দেখা গেল। সুপার ওভারের রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে ভারত ‘এ’–কে হারিয়ে রাইজিং স্টারস এশিয়া কাপের ফাইনাল নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ ‘এ’ দল (Bangladesh A Team)। ম্যাচের শেষ বলে আকবর আলীর ভুলে যে ম্যাচ হাতছাড়া হতে বসেছিল, একই আকবরই সুপার ওভারে পাওয়া ওয়াইডে দলের জন্য নিশ্চিত করলেন জয়।
মূল নাটক শুরু হয় শেষ ওভার থেকেই। তাড়া করতে নেমে ভারত ‘এ’–র প্রয়োজন ছিল ২০ ওভারে ১৯৫ রানের। শেষ দুই ওভারে প্রয়োজন ২১, হাতে ৫ উইকেট। সেই সময়ই বল হাতে আসেন রিপন মণ্ডল। দুর্দান্ত নিয়ন্ত্রণে তিনি দেন মাত্র ৫ রান, তুলে নেন একটি উইকেটও। শেষ ওভারে রাকিবুল হাসান প্রথম পাঁচ বলে দিলেন ১২ রান। ভারতের দরকার শেষ বলে ৪। বাউন্ডারির লক্ষ্যে মারা হার্শ দুবের শট চলে যায় সোজা লং–অনে। সহজ রানআউট মিস করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক আকবর আলী—কোনো ফিল্ডারও ছিলেন না কাছাকাছি। সুযোগ নিয়ে দুজনের দৌড়ে ভারতের ব্যাটসম্যানরা নেন তিন রান। ম্যাচ হয়ে যায় টাই।
এই ভুলের দায় যেন বয়ে বেড়াচ্ছিল বাংলাদেশ শিবির। কিন্তু সুপার ওভারে সামনে আসে আরেক গল্প। বল হাতে নায়ক হয়ে ওঠেন রিপন মণ্ডল (Ripon Mondol)। প্রথম বলেই ইয়র্কারে বোল্ড করেন ভারতের অধিনায়ক জিতেশ শর্মাকে। পরের বলেই আশুতোষ শর্মার ক্যাচ ধরা হয় কাভারে। ভারত গুটিয়ে যায় ০ রানে।
বাংলাদেশের দরকার ছিল মাত্র ১ রান। কিন্তু প্রথম বলেই আউট হয়ে যান ইয়াসির আলী। তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে নামেন আকবর আলী। সুয়াশ শর্মার অফস্টাম্পের বাইরে যাওয়া বলকে আম্পায়ার ওয়াইড ঘোষণা করার সঙ্গে সঙ্গেই বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত হয়। আকবর মেলে ধরেন দুই হাত—মুক্তির আনন্দে।
এর আগে ম্যাচ গড়ার ব্যাটিং করেন হাবিবুর রহমান ও এস এম মেহরব। ইনিংসের শুরুতে হাবিবুর ৪৬ বলে ৩ চার ও ৫ ছক্কায় করেন ৬৫। শেষদিকে মাত্র ১৮ বলে মেহরবের ৬ ছক্কা–১ চারে অপরাজিত ৪৮ রানে স্কোর পৌঁছে যায় ১৯৪–এ। ওই রানই শেষ পর্যন্ত ম্যাচকে টেনে নেয় নাটকীয়তার কেন্দ্রে।
ভারতের লড়াইয়ে ছিলেন বৈভব সূর্যবংশী (১৫ বলে ৩৩) ও প্রিয়াংশ আর্য (২৩ বলে ৪৪)। শেষ মুহূর্তের চাপ, ক্যাচ–মিস, সুযোগ সৃষ্টি—সব মিলিয়ে ম্যাচের রং পাল্টে যায় বহুবার। তবে দিনের হাসি শেষে বাংলাদেশেরই।
আগামী রোববার ফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ হবে পাকিস্তান–শ্রীলঙ্কা ম্যাচের বিজয়ী দল। রাইজিং স্টারদের এই লড়াইয়ে বাংলাদেশের চোখ এখন শিরোপায়।


