নির্বাচনি সমাবেশে প্রশাসন ‘আন্ডারে আনার’ কথায় বিতর্কের জন্ম দিলেন জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরী

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরী (Shahjahan Chowdhury) নির্বাচনি প্রস্তুতি সভায় এক বক্তব্যে বলেন, সুযোগ থাকলে তিনি প্রশাসনকে নিজেদের অধীনে আনার নির্দেশ দিতেন। তার ভাষায়, “জনগণকে দিয়ে শুধু নির্বাচন হয় না… যার যার এলাকায় প্রশাসনকে আমাদের আন্ডারে আনতেই হবে—আমাদের কথায় উঠবে-বসবে, গ্রেফতার করবে, মামলা করবে।”

গতকাল শনিবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় চট্টগ্রামের জিইসি কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত জামায়াতের নির্বাচনি দায়িত্বশীলদের সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান (Dr. Shafiqur Rahman)।

সমাবেশে বক্তব্য দিতে গিয়ে শাহজাহান চৌধুরী বলেন, “জামায়াতে ইসলামীর জন্য আজকের এই সুযোগ ভবিষ্যতে আর আসবে না। দুর্নীতির টাকা বাদ দেন—পার্শ্ববর্তী দেশ হিন্দুস্তান থেকে বস্তা বস্তা টাকা দেশে ঢুকবে, অস্ত্র ঢুকবে।”

তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের সব শিক্ষকদের ‘দাঁড়িপাল্লা’ প্রতীকের কথা প্রচার করতে হবে। এমনকি প্রশাসনের কর্মকর্তারাও নির্বাচনি এলাকা অনুযায়ী প্রার্থীর নির্দেশে কাজ করবে—এমন প্রত্যাশার কথাও তুলে ধরেন তিনি। তার ভাষায়, “পুলিশ আপনার পেছনে পেছনে হাঁটবে, ওসি সাহেব সকালে জেনে নেবে আপনার কী প্রোগ্রাম। টিএনও যা উন্নয়ন এসেছে—সব হিসাব নমিনির কাছ থেকে বের করবে।”

নিজের অতীত কর্মকাণ্ডের কথাও তুলে ধরে তিনি বলেন, এখনও প্রার্থী ঘোষণার আগেই তিনি বিভিন্ন উপদেষ্টাদের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে দক্ষিণ জেলার লোহাগাড়া ও সাতকানিয়ায় শত শত কোটি টাকার উন্নয়নসহায়তা এনে দিয়েছেন। “জনগণকে কিছু দিতে না পারলে তাদের অভাব-অভিযোগ বুঝতে পারবেন না”—বলেই তিনি তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদারের আহ্বান জানান।

ডেকোরেশনের শ্রমিক থেকে শুরু করে সব শ্রেণির মানুষকে গুরুত্ব দিয়ে সম্মেলন আয়োজনের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, “শুধু সংগঠনের ওপর ভরসা করলে নির্বাচন জেতা কঠিন। জনগণের কাছে জায়গা না পেলে সংগঠন দিয়ে সব হয় না।”

তার বক্তব্যে বিগত সরকারের প্রসঙ্গও উঠে আসে। তিনি দাবি করেন, আগের ‘ফ্যাসিস্ট সরকার’ শুধু আওয়ামী লীগের মানুষ দিয়ে দেশ চালাতে চেয়েছিল, জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছিল, আর সেই কারণেই “জনতার আন্দোলনে” তাদের নেতারা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *