দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও সব রাজনৈতিক দলের প্রস্তুতি বিবেচনায় রেখে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (National Citizens’ Party – NCP)–র আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিন (CEM Nasir Uddin)–এর সঙ্গে বৈঠকে এ আহ্বান জানান তিনি। বৈঠকে তিনি নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে দলের পক্ষ থেকে বেশ কিছু প্রস্তাব ও আপত্তির বিষয় তুলে ধরেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “রাজনৈতিক পরিস্থিতির আলোকে এবং সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে যে সময় নির্বাচনের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত, সেই সময়েই তফশিল ঘোষণা করা উচিত।” তিনি আরও বলেন, “নির্বাচনের প্রস্তুতিতে যেন কোনো দল পিছিয়ে না পড়ে, সে বিষয়েও ইসিকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে।”
এ সময় তিনি সম্প্রতি গৃহীত আরপিও (গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ) সংশোধনীকে স্বাগত জানান। তবে এই সংস্কার বাতিলের চেষ্টা, আদালতের দ্বারস্থ হওয়া এবং একচেটিয়া নির্বাচনের চেষ্টার বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানান নাহিদ ইসলাম।
তিনি অভিযোগ করেন, “একটি বিশেষ দল সরকার ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করে একক প্রতীকে নির্বাচন করার জন্য চাপ দিচ্ছে। আদালতের মাধ্যমেও এই সংস্কার বাতিলের উদ্যোগ চলছে, যা গণতন্ত্রের পরিপন্থী।” এ অবস্থায় নির্বাচন কমিশনকে তাদের নীতিগত অবস্থানে অটল থাকার আহ্বান জানান তিনি।
এনসিপির প্রতীক বরাদ্দ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে নাহিদ বলেন, “নিবন্ধনের শুরু থেকে কেন্দ্রীয় ও তৃণমূলের নেতাকর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। নির্বাচন কমিশনের সহায়তায় অবশেষে শাপলা কলি প্রতীক বরাদ্দ হয়েছে এবং এনসিপি এবার এই প্রতীকেই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে।”
অর্থ ও ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়েও উদ্বেগ জানান নাহিদ ইসলাম। বলেন, “কালো টাকার প্রভাব যেন নির্বাচনকে প্রভাবিত না করে, সে বিষয়ে ইসি যেন কঠোর অবস্থান নেয়।” তিনি আরও বলেন, “হলফনামায় প্রার্থীদের তথ্য যথাযথভাবে যাচাই-বাছাই করা দরকার। কোনো প্রার্থী যদি তথ্য গোপন করে বা বেআইনি পন্থায় টাকা খরচ করে, তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।”
এ সময় প্রশাসনিক পর্যায়ে কর্মকর্তাদের রদবদল নিয়েও মন্তব্য করেন তিনি। বলেন, “ডিসি ও এসপি বদলির ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাব স্পষ্ট। এই প্রভাব নির্বাচনে পক্ষপাত সৃষ্টি করতে পারে, যা গ্রহণযোগ্যতা নষ্ট করবে।”
গণভোট বিষয়ে সঠিক প্রচার না হলে জনসাধারণ বিভ্রান্ত হতে পারে বলেও সতর্ক করেন নাহিদ ইসলাম। “প্রচারে গাফিলতি হলে গণভোটের প্রশ্ন সাধারণ মানুষের কাছে ঠিকভাবে পৌঁছাবে না। এই বিষয়ে ইসি যেন সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে,”—বলেন তিনি।


