পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী : তারেক রহমান ৪৭%, খালেদা জিয়া ১৯%: প্রথম আলোর জরিপ

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশের মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছে প্রথম আলো-এর এক সাম্প্রতিক জনমত জরিপ। জরিপের ফলাফলে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে, দেশের রাজনীতিতে বর্তমানে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় ব্যক্তিত্ব হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন তারেক রহমান (Tarique Rahman)।

জরিপে অংশ নেওয়া সাড়ে ৪৭ শতাংশ মানুষ মনে করেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানই হতে পারেন বাংলাদেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী। তার মা দেশনেত্রী, খালেদা জিয়া (Khaleda Zia)-র অসুস্থতা ও রাজনৈতিক নিষ্ক্রিয়তার প্রেক্ষাপটে গত কয়েক বছর ধরে দল পরিচালনার দায়িত্ব তারেক রহমানই পালন করে আসছেন। বিএনপির শীর্ষ নেতারাও সরাসরি বলছেন, দল জয়ী হলে তারেক রহমানই হবেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনবারের প্রধানমন্ত্রী এবং দুবারের সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা হলেও বর্তমানে খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং রাজনীতিতে সক্রিয় নন। তারপরও প্রায় ১৯ শতাংশ মানুষ মনে করেন, খালেদা জিয়া আবারও প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে ফিরতে পারেন। সব মিলিয়ে জরিপ অনুযায়ী, মোট ৬৬ শতাংশের কিছু বেশি মানুষ মনে করেন, খালেদা জিয়া অথবা তারেক রহমানের কেউ একজন হবেন পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী।

অন্যদিকে, জামায়াতে ইসলামী-র আমির শফিকুর রহমান (Shafiqur Rahman)-কে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখছেন ২৫.৪ শতাংশ অংশগ্রহণকারী। যদিও তিনি অতীতে একাধিকবার নির্বাচনে অংশ নিয়ে কখনও জয়ী হতে পারেননি।

শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)-কে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আবারও দেখতে চান ৭ শতাংশের কিছু বেশি মানুষ। তবে জরিপের তথ্য সংগ্রহের সময়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার আগে এই তথ্য নেওয়া হয়েছে। দীর্ঘ ১৫ বছর দেশের শাসনক্ষমতায় থাকা শেখ হাসিনা ৫ বার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু ২০০৪ সালের ৫ আগস্ট গণভুত্থানের পর তিনি ভারতে পালিয়ে যান। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, বয়স, শারীরিক অবস্থা ও মৃত্যুদণ্ডের কারণে তার আর বাংলাদেশের রাজনীতিতে ফেরা প্রায় অসম্ভব।

এই জরিপে আরও উঠে এসেছে, জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপি-র সভাপতি নাহিদ ইসলামকে ০.৬ শতাংশ মানুষ এবং জাতীয় পার্টি (জাপা)-র চেয়ারম্যান জিএম কাদের (GM Quader)-কে ০.২ শতাংশ মানুষ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চান।

জরিপটি পরিচালিত হয়েছে কি মেকারস কনসাল্টিং লিমিটেড এর মাধ্যমে, যেখানে দেশের ১৮ থেকে ৫৫ বছর বয়সী বিভিন্ন শ্রেণী, পেশা ও আয়ের ১,৩৪২ জন নাগরিক অংশ নেন। অংশগ্রহণকারীরা পাঁচটি শহর ও পাঁচটি গ্রাম বা আধা-শহর এলাকা থেকে নির্বাচিত হয়েছেন। জরিপের সময়কাল ছিল ২২ থেকে ২৮ অক্টোবর। জরিপের নির্ভরযোগ্যতার মাত্রা ৯৮ শতাংশ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *