বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা এলাকায় টিএমএসএস নামে একটি এনজিওর কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে না পারায় ঋণগ্রহীতার বাড়ির পালিত চীনাহাঁস তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ফুল্লশ্রী গ্রামে, যেখানে সাধারণ মানুষের মধ্যে এই আচরণ নিয়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের ফুল্লশ্রী গ্রামের মো. মুরাদ হোসেনের স্ত্রী হাফিজা খানম বছরের শুরুর দিকে এনজিওটি থেকে ৬০ হাজার টাকা ঋণ নেন। এরপর সপ্তাহে ১ হাজার ২৫০ টাকা করে নিয়মিত কিস্তি পরিশোধও করছিলেন তিনি। কিন্তু মঙ্গলবার দুপুরে কিস্তি সংগ্রহে তার বাড়িতে গেলে হাফিজা সাময়িকভাবে কিস্তি দিতে অপারগতা জানান।
এ সময় এনজিওর মাঠকর্মী ফিরোজ খান ও তার সঙ্গে থাকা আরেক ব্যক্তি জোরপূর্বক কিস্তির পরিবর্তে হাঁস দাবি করেন। হাফিজা প্রতিবাদ জানিয়ে পাশের বাড়িতে চলে গেলে মাঠকর্মীরা তার উঠানে থাকা বড় একটি চীনাহাঁস ধরে নিয়ে যান বলে অভিযোগ।
হাফিজা খানম বলেন, তিনি শুধু পরবর্তী সপ্তাহে কিস্তির টাকা দিতে পারবেন বলে জানানোর পরও বাড়িতে অনুপস্থিত অবস্থায় তার মেয়ের পালিত শখের হাঁসটি নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হাঁসটির দাম প্রায় এক হাজার ছয়শ টাকা বলেও তিনি দাবি করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা এনজিও সমন্বয় পরিষদের সভাপতি কাজল দাস গুপ্ত জানান, কিস্তির বিনিময়ে কোনো সদস্যের বাড়ি থেকে জিনিসপত্র নিয়ে আসা সম্পূর্ণ অবৈধ এবং অনৈতিক। তার ভাষায়, সংশ্লিষ্ট এনজিওটি উপজেলা এনজিও সমন্বয় পরিষদের আওতাধীনও নয়।
একইভাবে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা তপন বিশ্বাস বলেন, এনজিওটির কার্যক্রম তার দপ্তরের তালিকাভুক্ত নয়। কিস্তির পরিবর্তে হাঁস আনা আইনবিরুদ্ধ এবং এমন কর্মকাণ্ডকে কোনোভাবেই সমর্থন করা যায় না।
তবে অভিযুক্ত মাঠকর্মী ফিরোজ খান ঘটনাটি স্বীকার করে বলেন, কিস্তির জায়গায় ৮শ টাকা মূল্য ধরে হাঁসটি নেওয়া হয়েছে। তার দাবি, বিষয়টি ভুলভাবে প্রচার করা হচ্ছে।
এনজিওটির ম্যানেজার মো. রাজেক ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, “ঋণগ্রহীতা হাঁস বিক্রি করে টাকা দেওয়ার কথা বলেছিলেন। কর্মী যদি দাম ধরে কিনে আনে, তাতে অপরাধ দেখি না।” কিন্তু স্থানীয়দের মতে, এনজিও কর্মীদের এমন আচরণ গ্রামীণ পরিবেশে অস্বস্তি ও সংশয়ের জন্ম দিয়েছে।


