রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা ভুলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল–বিএনপি (BNP) চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া (Khaleda Zia)-র শারীরিক সংকট নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন আরেক সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বর্তমানে ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina)। ভারতীয় সংবাদ সংস্থা আইএএনএস (IANS)-কে ইমেইলের মাধ্যমে দেয়া এক সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা বলেন, “বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ—এটা জানতে পেরে আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। তিনি যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন, সেই প্রার্থনা করি।”
এই সাক্ষাৎকারটি নিয়ে সংস্থাটি নিজেরাই একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তাদের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে। সেখানে উল্লেখ করা হয়, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ক্রমাগত অবনতি হওয়া শারীরিক অবস্থার বিষয়ে শেখ হাসিনা তার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং তার দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন। আইএএনএস জানিয়েছে, তারা ইমেইলের মাধ্যমে শেখ হাসিনার কাছে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য এবং সাম্প্রতিক মেডিকেল রিপোর্ট সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া চায়। তার উত্তরেই এই মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।
প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়, ৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরেই হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, লিভার সিরোসিস, কিডনির জটিলতা সহ একাধিক শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। বর্তমানে তিনি ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠিত একটি বিশেষজ্ঞ টিম তার চিকিৎসা তদারক করছে।
চিকিৎসা সূত্রের বরাতে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, তার হার্ট ও ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়ার পর চিকিৎসক বোর্ডের পরামর্শে ২৩ নভেম্বর রাতে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে ২৭ নভেম্বর অবস্থা সংকটাপন্ন হলে তাকে সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়, যেখানে এখন তিনি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। চিকিৎসকদের মতে, উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করা হলেও তা বারবার বিলম্বিত হচ্ছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে শুক্রবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (Mirza Fakhrul Islam Alamgir)-কে উদ্ধৃত করে জানানো হয়েছে, কাতারের আমিরের সহযোগিতায় একটি বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করা হলেও, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সেটি ঢাকায় অবতরণ করতে পারেনি। ফখরুল আরও জানান, খালেদা জিয়ার বিদেশযাত্রা তার শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করছে। যদি তিনি ভ্রমণ উপযোগী অবস্থায় থাকেন এবং চিকিৎসকরা অনুমতি দেন, তাহলে আগামী রবিবার, ৭ ডিসেম্বর তাকে লন্ডনে পাঠানো হতে পারে। তবে পরিস্থিতি এখনও অনিশ্চিত এবং নানা জটিলতার কারণে তা আটকে রয়েছে।


