সাতচল্লিশের উত্তরসূরি একাত্তর, আর একাত্তরের উত্তরসূরি চব্বিশ: হেফাজতে ইসলাম

দাড়ি ও টুপিকে ‘রা’\জা’\কা’\রে’\র প্রতীক’ হিসেবে তুলে ধরার প্রতিবাদ জানিয়ে তীব্র ভাষায় বিবৃতি দিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী। বিজয়ের মাসে ইসলামের চিহ্নগুলোকে ঘৃণার লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে ‘ইসলাম নির্মূলের রাজনীতি’ ফের সক্রিয় হয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেছেন।

বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে মাওলানা আজিজুল হক বলেন, “বিজয় দিবসকে উপলক্ষ করে দেশের বিভিন্ন স্থানে ইসলামের বিধান ও মুসলমানদের প্রতীক—দাড়ি ও টুপিকে—রা’\জা’\কা’\রে’\র প্রতীক বানিয়ে ঘৃণার চর্চা আবারও শুরু হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। জাতিকে বিভক্ত করার এই ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে হবে।”

তিনি বলেন, “পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনার শাসনামলে মুসলমানদের নাম-পরিচয় ও ধর্মীয় চিহ্নকে ঘৃণার লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে ইসলাম নির্মূলের এক গভীর রাজনীতি চালানো হয়েছিল। আজ সেই পথেই আবারো হিন্দুত্ববাদী অপশক্তি ও বাম-সেকুলাররা উস্কানি দিচ্ছে।”

ইতিহাসের পুনরালোচনার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “কথিত ‘রা’\জা’\কা’\র’ বয়ানের ভিত্তি ধসে পড়েছিল বলেই ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন ঘটেছিল। ভারতের তৈরি বয়ানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নতুন প্রজন্ম প্রত্যাখ্যান করেছে। একাত্তরের জনযুদ্ধ আমাদের নিজস্ব ইতিহাস, কোনো বিদেশি শক্তির মালিকানা সেখানে থাকতে পারে না।”

মাওলানা আজিজুল হক আরও বলেন, “একাত্তরকে আধিপত্যবাদীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। তারাই আজ আমাদের বিজয় দিবস ছিনতাই করতে চায়। কিন্তু আমরা তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নে বসে থাকব না।”

তিনি আরও অভিযোগ করেন, “ভারতীয় বয়ানে ‘মুক্তিযুদ্ধ’ প্রচারকারীরা মূলত ফ্যা’\সি’\বা’\দী ও আধিপত্যবাদীদের দালাল। একাত্তরকে ব্লাসফেমি বানানো হয়েছে—এমনকি কোনো বিতর্কিত সংখ্যা বা তথ্য নিয়েও কথা বলা নিষিদ্ধ!”

তার ভাষায়, “একাত্তরের জনযুদ্ধ কারও একার পৈতৃক সম্পত্তি নয়। সাতচল্লিশের উত্তরসূরি একাত্তর, আর একাত্তরের উত্তরসূরি চব্বিশ—এই সিলসিলাকে অস্বীকার করার সুযোগ নেই। আমাদের উচিত সত্য ইতিহাস চর্চা ও প্রজন্মকে সত্য জানানো।”

বক্তব্যের এক পর্যায়ে মাওলানা আজিজুল হক বলেন, “বদরুদ্দীন উমর বলে গেছেন—‘স্বাধীনতাযুদ্ধের লিখিত ইতিহাস প্রায় ৯০ ভাগই মিথ্যা’। তাই এই বিজয়ের মাসে বিদগ্ধ ইতিহাসবিদদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি—নির্মোহভাবে একাত্তরের জনযুদ্ধের ইতিহাস নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে ধরুন।”

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *