ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির মুত্যু সংবাদকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে ঢাকার কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে ঘেরাও ও ভাঙচুর চালায় একদল বিক্ষুব্ধ যুবক। তবে এই ঘটনাকে ঘিরে উঠেছে নানা প্রশ্ন—এটি কি প্রকৃত শোকপ্রকাশ, না কি উগ্রপন্থী চক্রের পরিকল্পিত উসকানি?
সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরা
লেখক ও গবেষক কাদরউদ্দীন শিশির (Qadaruddin Shishir) সামাজিক মাধ্যমে দেয়া এক পোস্টে এই ঘটনায় স্পষ্ট সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তিনি লেখেন,
“প্রথম আলোর অফিস ঘেরাওয়ের এই কাণ্ডটিকে সিরিয়াসলি সন্দেহ করুন। অতীতে যারা প্রথম আলোর কার্যালয় ঘেরাওয়ের নেপথ্যে ছিল, তারা উগ্রপন্থার সাথে জড়িত—তা আমি আরও কয়েক মাস আগে প্রমাণ করেছিলাম।”
তিনি আরও বলেন, “আজও কোনো উগ্রপন্থী চক্র সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করে সেখানে নিয়ে গিয়েছে কিনা, সেটা সবাই সতর্কভাবে পর্যবেক্ষণ করুন। হাদির মুত্যুর সঙ্গে প্রথম আলোর কার্যালয় ঘেরাও খুবই সন্দেহজনক।”
শিশির আহ্বান জানান, “ঘটনার ভিডিও করুন সবাই, কারা এখানে নেতৃত্ব দিচ্ছে এটা নিশ্চিত হওয়া দরকার। উগ্রপন্থী কেউ কেউ বর্তমান উত্তপ্ত পরিস্থিতির সুযোগ নিতে পারে। সরকারের উচিত জরুরি ভিত্তিতে প্রথম আলোর অফিসের সামনে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা।”
আবেগ নয়, আদর্শ—বলছেন হাদির ঘনিষ্ঠজনরা
অন্যদিকে হাদির ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত সোয়েব মাহমুদ বিক্ষোভকারীদের সমালোচনা করে বলেন,
“প্রিয় ভাইয়েরা, আমাদের ভাই হাদির আত্মত্যাগকে অসম্মান কইরেন না। বিতর্কিত কইরেন না। প্রথম আলো ভাঙচুর করতে গেসেন কার ইন্ধনে? আমাদের হাদি তো এটা চায়নি কখনও! এটি হঠকারী সিদ্ধান্ত।”
তিনি আরও যোগ করেন, “ইন্টেলেকচুয়াল লড়াইয়ের জন্য আমাদের হাদি কালচারাল সেন্টার খুলেছিল। আমাদের ভাইয়ের আদর্শকে পুনরুজ্জীবিত করেন, ধারণ করেন।”
বিক্ষোভের পেছনে কী আছে?
ঘটনাস্থল থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন ফুটেজ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানে দেখা গেছে, বিক্ষোভকারীরা প্রথমে স্লোগান দিতে শুরু করে এবং পরে অফিসের সামনে অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে কিছু অংশ ভবনের বাইরে ও প্রবেশপথে ভাঙচুর চালায়। তবে এখনো পর্যন্ত ঘটনাটি কারা সংগঠিত করেছে, তাদের পরিচয় কিংবা রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নিয়ে পরিষ্কার তথ্য মেলেনি।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বলে জানা গেছে। তবে এই পরিস্থিতিতে বিশ্লেষকরা এবং হাদির ঘনিষ্ঠরা সবাইকেই আহ্বান জানাচ্ছেন—সংযত থাকতে এবং অপশক্তির ফাঁদে না পা দিতে।


