নিরাপত্তা উদ্বেগ: গানম্যান ও আগ্নেয়াস্ত্র চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন ১৫ প্রার্থী

নির্বাচনের আগ মুহূর্তে দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে রাজনৈতিক মহলে। এ পরিস্থিতিতে একের পর এক রাজনীতিবিদ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (Home Ministry)-এর কাছে নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করছেন। কারও চাওয়া পুলিশের একটি দল, কেউ চাইছেন সশস্ত্র দেহরক্ষী, আবার কেউ আবেদন করছেন আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সের জন্য।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত অন্তত ১৫ জন রাজনীতিবিদ তাদের কাছে গানম্যান, নিরাপত্তা বা অস্ত্রের লাইসেন্স চেয়ে আবেদন করেছেন। প্রতিদিনই এ সংখ্যা বাড়ছে। পাশাপাশি প্রায় ২৫ জন সরকারি কর্মকর্তাও ব্যক্তিগত অস্ত্রের লাইসেন্স চেয়ে আবেদন করেছেন।

রাজনৈতিক অঙ্গনে শীর্ষ পর্যায়ের নেতারাও এই তালিকায় রয়েছেন। জামায়াতে ইসলামীর (Jamaat-e-Islami) আমির শফিকুর রহমানের জন্য গানম্যান ও বাসভবনের জন্য সশস্ত্র পুলিশ মোতায়েনের আবেদন করা হয় ১৭ ডিসেম্বর। জামায়াতের অফিস সেক্রেটারি আ ফ ম আবদুস সাত্তার স্বাক্ষরিত আবেদনে বলা হয়, শফিকুর রহমান দেশব্যাপী সফর করছেন, সভা-সমাবেশ করছেন, দলীয় কার্যক্রম বেড়েছে—তাই তাঁর সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি।

এছাড়াও যাঁরা নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করেছেন তাদের মধ্যে আছেন জাতীয় পার্টি (জেপি)-র চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)-র সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমদ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর মহাসচিব ইউনুস আহম্মেদ সেখ প্রমুখ।

আনোয়ার হোসেন মঞ্জু ও কর্নেল অলি আহমদের আবেদন আসে শরিফ ওসমান হাদিকে গু’\লি করার ঘটনার আগেই। কর্নেল অলি তাঁর আবেদনে উল্লেখ করেন, তিনি জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হবেন এবং প্রচারে অংশ নিতে চান পুলিশের সার্বক্ষণিক সহায়তা নিয়ে। আনোয়ার হোসেন মঞ্জুও একই ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা চেয়েছেন।

গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি সরাসরি পুলিশ সদস্য ও গানম্যান দাবি করেছেন।

নিরাপত্তার আবেদন করেছেন আরও বেশ কয়েকজন সম্ভাব্য প্রার্থী। এর মধ্যে রয়েছেন বিএনপি মনোনীত মেহেরপুর-১ আসনের মাসুদ অরুণ, গোপালগঞ্জ-১ আসনের সেলিমুজ্জামান সেলিম, গোপালগঞ্জ-৩ এর এস এম জিলানী, ইসলামী আন্দোলনের ইউনুস আহম্মেদ সেখ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মুহাম্মদ শাখাওয়াত হোসাইন (হিরু)।

এছাড়া আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স চেয়ে আবেদন করেছেন বিএনপি-র ঢাকা-৪ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী তানভীর আহমেদ (রবিন) এবং পাবনা-৩ আসনের হাসান জাফির তুহিন।

বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক অঙ্গনে আতঙ্ক বা অনিরাপত্তার অনুভূতি বাড়ছে, যা এসব আবেদনের সংখ্যা বাড়ার অন্যতম কারণ।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখন এসব আবেদন যাচাই-বাছাই করে পর্যায়ক্রমে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। তবে এই প্রবণতা নির্বাচনপূর্ব রাজনৈতিক পরিবেশের অনিশ্চয়তা এবং সহিংসতা নিয়ে আশঙ্কার বার্তাই দিচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *