ভোলায় দুই পক্ষের মধ্যে ঘ’\ষণাকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জামায়াতে ইসলামীর দায়ের করা মামলায় রোববার জামিন পেয়েছেন জেলা সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক, দেশের পরিচিত সংগীত শিল্পী আসিফ আলতাফ (Asif Altaf) এবং উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মো. হেলাল উদ্দিনসহ মোট ২৬ জন নেতাকর্মী।
বিজয় দিবসে ভোলা জেলা সদরের ভেলুমিয়া ইউনিয়নে ‘রাজাকার’ বলাকে কেন্দ্র করে বিএনপির এক কর্মীর সঙ্গে মার’\ধরের অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনাকে ঘিরে ওই এলাকায় দুই দফায় দুই দলের মধ্যে তীব্র ঘ’\ষণা সৃষ্টি হয়। ইউনিয়ন পর্যায়ের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষ থেকেই পৃথক মামলা দায়ের করা হয়।
এরই ধারাবাহিকতায়, বৃহস্পতিবার জামায়াতে ইসলামি (Jamaat-e-Islami)-এর ভেলুমিয়া ইউনিয়নের বাজার শাখার সভাপতি মো. মোমেনের করা মামলায় আসিফ আলতাফ ও মো. হেলাল উদ্দিনকে প্রধান আসামি করে মোট ২৬ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। মামলায় যাদের নাম আসে, তাদের মধ্যে অনেকেরই ঘটনার সঙ্গে কোনো সম্পৃক্ততা নেই—এমন দাবি তুলে বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়।
রোববার আসিফ আলতাফ ও মো. হেলাল উদ্দিনসহ অভিযুক্ত ২৬ জন ভোলা (Bhola) জেলা সদর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
এদিন আদালত চত্বরে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি আমিনুল ইসলাম খান, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মো. রাইসুল আলমসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতারা। পাশাপাশি বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরাও সেখানে জড়ো হন, যা আদালত এলাকায় একটি দৃশ্যমান রাজনৈতিক উপস্থিতি তৈরি করে।
জামিন পাওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আসিফ আলতাফ। তিনি বলেন, যে ঘটনার সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই, সেই মামলায় তাকে আসামি করা হয়েছে। এর মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দলটির অবস্থান জনসমক্ষে স্পষ্ট হয়ে গেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তার ভাষায়, মানুষ ভবিষ্যতে এই দলকে আর বিশ্বাস করবে না। পরে হাজারো নেতাকর্মী তাকে নিয়ে মিছিল করে দলীয় কার্যালয়ে যান।
বিএনপি নেতাদের পক্ষে আদালতে জামিন শুনানিতে অংশ নেন সিনিয়র আইনজীবী ও ভোলা বারের সাবেক সভাপতি ছালাউদ্দিন হাওলাদার, জেলা বারের সভাপতি ফরিদ উদ্দিন এবং আইনজীবী সমিতির সম্পাদক অ্যাডভোকেট ড. আমিরুল ইসলাম বাছেদসহ একাধিক অভিজ্ঞ আইনজীবী।
অ্যাডভোকেট ড. আমিরুল ইসলাম বাছেদ জানান, আদালত মামলার ২৬ জন আসামির সবাইকে জামিন দিয়েছেন। জামিনপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন—সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মোশারফ হোসেন শাজাহানের ছেলে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আসিফ আলতাফ, উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মো. হেলাল উদ্দিন, ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ইউনুছ কমান্ডার, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান বাদশার ছেলে মো. হাসনাইন, ইউনুছ কমান্ডারের ছেলে ঝিলন খান, আব্দুল মান্নানের ছেলে মো. টিপু, মো. জাহাঙ্গীরের ছেলে মো. রাশেদ, ইস্রাফিল মাস্টার, মো. রিয়াজ, মো. আবু বকর, হাফেজ খানের ছেলে মো. নিলখান, মো. ফয়সাল, মো. নুর আলম, মিলন হাওলাদার, মো. আনোয়ার, মিলন চৌধুরী, মো. মেহেদী মাহাবুব, লিটন রাঢ়ি, বুলবুল খান, মো. সোহাগ, মো. মাহাদী, মো. স্বপন, মো. বাবুল সর্দার, স্বপন রাড়ি, মো. ইসলাম মুন্সি এবং মো. ইউনুছ হাওলাদারের ছেলে মো. রবিউল।


