সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ (Benazir Ahmed)-এর বিলাসবহুল ফ্ল্যাট থেকে জব্দ করা ২৪৬ ধরনের ব্যবহার্য ও ব্যক্তিগত সামগ্রী প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে হস্তান্তর করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) (ACC)। সোমবার (২২ ডিসেম্বর) এসব মালামাল আনুষ্ঠানিকভাবে তহবিলে পৌঁছে দেন দুদকের কর্মকর্তারা। বিষয়টি নিশ্চিত করেন দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন।
দুদকের তথ্যমতে, আদালতের আদেশে গুলশানের র্যানকন টাওয়ারে অবস্থিত বেনজীর আহমেদের চারটি ফ্ল্যাট একত্র করে গড়া একটি বিলাসবহুল ডুপ্লেক্স থেকে বিপুল পরিমাণ আসবাব, ইলেকট্রনিকস, পোশাকসহ নানা সামগ্রী উদ্ধার করা হয়। সেখানে ছিল ১৯টি ফ্রিজ, ১০০ টন ক্ষমতাসম্পন্ন এয়ার কন্ডিশনার, বিলাসবহুল সোফাসেট, মিনি থিয়েটার রুম, সুইমিং পুলসহ নানা আধুনিক সুবিধা।
ত্রাণ তহবিলে জমা দেওয়া সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে—
– ১২২টি শার্ট, ২৬৬টি প্যান্ট, ৩০টি ব্লেজার, ৮টি স্যুট
– ৭২২টি টি-শার্ট, ২২৪টি পাঞ্জাবি, ৪৭টি পায়জামা
– ৮৮ জোড়া স্যান্ডেল, ৩৫ জোড়া কেডস, ৩৮ জোড়া জুতা
– ৪৯৪টি শাড়ি, ২৫০ সেট থ্রি-পিস, ৪৯৬টি সালোয়ার-কামিজ
– ৬২২টি লেডিস টপস, ৩৫৫টি লেডিস প্যান্ট, ২৮টি লেডিস টি-শার্ট
– ২১২টি জামা, ৩৪৭টি ওড়না, ৮৯টি শাল-চাদর, ১৩২টি শীতের জামা
– ১৬টি লেহেঙ্গা, ১১টি পুরুষদের সোয়েটার, ৩৪টি লেডিস সোয়েটার
– ১০৯টি বেডশিট, ৭৫টি লেডিস ভ্যানিটি ব্যাগ, ৩৪টি সানগ্লাস, ৬৭টি ট্রাউজার
তবে দুদক সূত্র জানিয়েছে, কিছু পচনশীল বা ব্যবহৃত মালামালের নমুনা সংরক্ষণ করা হয়েছে, যেগুলো ত্রাণ তহবিলে হস্তান্তর করা হয়নি। তাছাড়া কিছু মূল্যবান আসবাব, যেমন খাট, ডাইনিং টেবিল, সোফাসেট, আলমারি ইত্যাদি ভবিষ্যতে নিলামে তোলা হতে পারে—এ বিষয়ে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
২০২৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর বেনজীর আহমেদ, তাঁর স্ত্রী ও দুই কন্যার বিরুদ্ধে চারটি মামলা করে দুদক। অভিযোগে বলা হয়, তাঁদের বিরুদ্ধে ৭৪ কোটি ১৩ লাখ ৩৯ হাজার টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন এবং সম্পদের তথ্য গোপনের প্রমাণ মিলেছে।
দুদকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ৪ মে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের ঠিক আগমুহূর্তে বেনজীর আহমেদ গোপনে মিথ্যা তথ্য ব্যবহার করে নতুন পাসপোর্ট তৈরি করেন এবং তাঁর স্ত্রী ও কন্যাদের নিয়ে দেশ ত্যাগ করেন।


