বিএনপি (BNP) চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকেও শোক ও সমবেদনার ঢল নেমেছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi), চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং (Li Qiang) এবং পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার (Ishaq Dar) পৃথক বার্তায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া শোকবার্তায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, “ঢাকায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে আমি গভীরভাবে মর্মাহত। তাঁর পরিবার ও বাংলাদেশের জনগণের প্রতি আমাদের আন্তরিক সমবেদনা। সর্বশক্তিমান সৃষ্টিকর্তা যেন শোকসন্তপ্ত পরিবারকে এই কষ্ট সহ্য করার শক্তি দেন।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশের উন্নয়ন এবং ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক জোরদারে তাঁর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।” স্মৃতিচারণ করে মোদি জানান, “২০১৫ সালে ঢাকায় তাঁর সঙ্গে আমার উষ্ণ সাক্ষাতের কথা আমি স্মরণ করছি। আমরা আশা করি, তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি ও রাজনৈতিক উত্তরাধিকার আমাদের দ্বিপক্ষীয় অংশীদারিত্বকে ভবিষ্যতেও পথ দেখাবে।” শোকবার্তার শেষাংশে মোদি লেখেন, “তার আ’\ত্মা শান্তিতে থাকুক।”
চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং, মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস (Professor Muhammad Yunus)-এর কাছে পাঠানো এক শোকবার্তায় বলেন, “বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন বাংলাদেশের একজন প্রবীণ ও প্রভাবশালী রাজনীতিক এবং চীনা জনগণের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তাঁর প্রধানমন্ত্রিত্বকালে চীন-বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ঐতিহাসিক অগ্রগতি লাভ করে।”
লি কিয়াং আরও বলেন, “দীর্ঘমেয়াদি বন্ধুত্ব, সমতা এবং পারস্পরিক কল্যাণের ভিত্তিতে দুই দেশের মধ্যে সমন্বিত সহযোগিতার যে ভিত্তি বেগম জিয়া রেখে গেছেন, তা চীন অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে মূল্যায়ন করে। ভবিষ্যতেও বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক আরও উচ্চ পর্যায়ে উন্নীত করতে চীন প্রস্তুত রয়েছে।”
পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া শোকবার্তায় লেখেন, “বেগম খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে আমি গভীরভাবে শোকাহত। মহান আল্লাহ তাআলা যেন তাঁকে জান্নাতের উচ্চ মাকাম দান করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজনকে এই কঠিন সময়ে ধৈর্য ধারণের তাওফিক দেন।”
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ই’\ন্তে’\কা’\ল করেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুর আগের ৩৭ দিন তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
গত ২১ নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার পর বাসায় ফেরার কিছুদিনের মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে ২৩ নভেম্বর তাঁকে জরুরিভাবে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে নিউমোনিয়াসহ একাধিক জটিলতা ধরা পড়ে এবং নিয়মিত কিডনি ডায়ালাইসিসও করতে হয়। সবশেষে মৃত্যুর সঙ্গে দীর্ঘ লড়াই শেষে ৩০ ডিসেম্বর সকালেই তাঁর মৃ’\ত্যু ঘটে।


