ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।
মৃত্যুর কারণ ও চিকিৎসা অবস্থা
বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালের নিউরোসায়েন্স ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন। খবরটি নিশ্চিত করেছেন তার ছোট ভাই সাইফুল্লাহ সিদ্দিক তুহিন। চিকিৎসকের বরাত দিয়ে তিনি জানান, মস্তিষ্কে স্ট্রোক ও রক্তক্ষরণজনিত কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।
অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক গত বৃহস্পতিবার ঢাকা ক্লাবে (রমনা) দাঁড়িয়ে কথা বলার সময় হঠাৎ পড়ে যান এবং মাথায় আঘাত পান। এরপর তাকে ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে নিউরোসার্জন অধ্যাপক নজরুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরে অবস্থা গুরুতর হলে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়, যেখানে তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।
জানাজা ও দাফনের পরিকল্পনা
পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আগামীকাল জুমার নামাজের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে সেখানে ঝামেলা হতে পারে বলে বিকল্প হিসেবে কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠ বা ধানমন্ডি-৭-এ জানাজা হতে পারে।
দাফনের বিষয়ে তার পরিবার জানিয়েছে, আগামীকাল আজিমপুর কবরস্থানে বাবা-মায়ের কবরের পাশে তাকে দাফন করা হবে।
পেশাগত জীবন ও অবদান
অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক ২০০৯ সালের ১৫ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৭তম উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। ২০১৭ সালের ৪ সেপ্টেম্বর উপাচার্যের দায়িত্ব শেষ করে পুনরায় বিভাগে অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন এবং ২০২০ সালের জুন মাসে অবসর গ্রহণ করেন।
২০২০ সালের ১৫ জুলাই তাকে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। এর আগে, ১৯৯৩ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান ছিলেন। এছাড়া, ১৯৯৭ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত তিনি বাসসের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন।
সম্মাননা ও স্বীকৃতি
২০১১-২০১২ সালে স্পেনের রাজা তাকে নারী উন্নয়ন, নারী শিক্ষা ও সামগ্রিক সামাজিক উন্নয়ন কার্যক্রমে নেতৃত্বের স্বীকৃতি হিসেবে ‘অর্ডার অব সিভিল মেরিট’ পদকে ভূষিত করেন। এছাড়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক (১৯৯১), সাধারণ সম্পাদক (১৯৯৪, ১৯৯৬) এবং সভাপতি (২০০৪, ২০০৫) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।