বরগুনায় আলোচিত মন্টু চন্দ্র দাস (Montu Chandra Das) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের পরিবারের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলেছেন বিএনপির (BNP) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান (Tarique Rahman)। তিনি ভুক্তভোগী পরিবারকে ন্যায়বিচার পেতে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন এবং জানান যে বিএনপি সবসময় তাদের পাশে থাকবে।
নিহতের পরিবারের সঙ্গে বিএনপির যোগাযোগ
রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বরগুনা পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কালিবাড়ি করইতলা এলাকায় নিহত মন্টু চন্দ্র দাসের বাড়িতে উপস্থিত হন ছাত্রদলের (Chhatra Dal) কেন্দ্রীয় সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক আমানউল্লাহ আমান। তার মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তারেক রহমান নিহতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন।
বিএনপির সমর্থন ও সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি
কথোপকথনের সময় তারেক রহমান বলেন,
“আপনারা বাংলাদেশের নাগরিক। আপনাদের সঙ্গে অন্যায় হয়েছে। তাই বিএনপি আপনাদের পাশে থাকবে। আপনারা যাতে ন্যায়বিচার পান, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। ভয় পাবেন না, দেশের মানুষ ও বিএনপি আপনাদের পাশে আছে।”
এ সময় মন্টু চন্দ্র দাসের স্ত্রী স্বামী হত্যার বিচার দাবি করে বলেন,
“মেয়ে ধর্ষণের বিচার চাইতে গিয়ে আমার স্বামী নিহত হয়েছে। এখন আমার তিনটি সন্তান নিয়ে কী করব? আমার তো কোনো নিরাপত্তা নেই।”
এদিকে, তারেক রহমান জানান, বিএনপির সিনিয়র নেতারা শিগগিরই ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে দেখা করবেন এবং তাঁদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করবেন। তিনি বলেন,
“আমাদের দলের আইনজীবীদের নির্দেশনা দেওয়া হবে যাতে আইনি সহায়তা নিশ্চিত করা যায়। এছাড়া, আপনার সন্তানদের জন্য আমরা যথাসম্ভব সহযোগিতা করব।”
তদন্ত ও বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে প্রতিশ্রুতি
নিহতের পরিবারের অভিযোগ, হত্যাকাণ্ডের ছয় দিন পার হলেও কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। এর জবাবে তারেক রহমান বলেন,
“আপনি টেনশন করবেন না। আমরা দেখি, আপনার জন্য কী ব্যবস্থা করতে পারি। আপনার সন্তানদের নিরাপত্তার বিষয়েও আমরা যথাযথ উদ্যোগ নেব।”
তিনি আরও জানান, বিএনপির কেন্দ্রীয় আইনজীবী ফোরামকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যাতে তারা আইনি পদক্ষেপ নেয়। একই সঙ্গে দলের পক্ষ থেকে ভুক্তভোগী পরিবারের সহযোগিতার জন্য আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ঘটনার পটভূমি
উল্লেখ্য, ১১ মার্চ রাত ১টার দিকে বরগুনার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কালিবাড়ি কড়ইতলা এলাকায় নিজ বাড়ির পেছন থেকে মন্টু চন্দ্র দাসের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরদিন নিহতের স্ত্রী অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে বরগুনা সদর থানায় (Barguna Sadar Thana) একটি মামলা দায়ের করেন।
এর আগে, ৫ মার্চ মন্টুর সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়েকে স্কুলে যাওয়ার পথে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে স্থানীয় সৃজীব চন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ওই দিনই পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে এবং আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
মন্টুর মরদেহ উদ্ধারের পর সন্দেহভাজন চারজনকে আটক করা হলেও পরে তিনজনকে অপহরণ ও ধর্ষণ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয় এবং একজনকে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়।