ফেরারি আসামিকে প্রার্থী হওয়া থেকে বিরত রাখার বিধানের বিরোধিতা নির্বাচন কমিশনের

নির্বাচন ব্যবস্থায় সংস্কার প্রস্তাবে দ্বিমত নির্বাচন কমিশনের

এএমএম নাসির উদ্দিন (AMM Nasir Uddin) নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন (Election Commission) ফেরারি আসামিকে প্রার্থী হতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার, এনজিও কর্মকর্তাদের জন্য তিন বছরের অবসরকালীন শর্ত বাতিল এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনে অনিয়ম নিয়ে আলাদা তদন্ত কমিশন গঠনের সুপারিশের বিরোধিতা করেছে।

ফেরারি আসামি প্রসঙ্গে কমিশনের মত

কমিশনের মতে, ফেরারি আসামিকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা হলে তা অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যবহার হতে পারে। ফলে এ ধরনের বিধান করার সুপারিশকে সমর্থন করেনি কমিশন।

এনজিও কর্মকর্তাদের অবসরকালীন শর্ত

বিদেশি সাহায্য পাওয়া এনজিও (NGO) কর্মকর্তাদের অবসরের পর তিন বছর অপেক্ষার বিধান রাখা প্রয়োজন বলে মত দিয়েছে ইসি।

তদন্ত কমিশন ও নিবন্ধন বাতিল প্রসঙ্গে মতপার্থক্য

২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলাদা তদন্ত কমিশন গঠন এবং ২০২৩ সালের নিবন্ধিত নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিলের সুপারিশ নিয়েও আপত্তি জানিয়েছে বর্তমান নির্বাচন কমিশন। কমিশনের মতে, শুধুমাত্র একাদশ সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তদন্ত হলে তা পক্ষপাতদুষ্ট হতে পারে।

স্থানীয় নির্বাচন ও জাতীয় নির্বাচন বিষয়ে মত

মুহাম্মদ ইউনূস (Muhammad Yunus) নেতৃত্বাধীন ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করা হলে জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত হতে পারে বলেও জানিয়েছে নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বাধীন কমিশন।

ইসির চিঠি ও সুপারিশ

ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ (Professor Ali Riaz) বরাবর ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ (Akhtar Ahmed) স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, কমিশনের স্বাধীনতা খর্ব হতে পারে এমন সুপারিশের বিষয়ে ভিন্নমত জানিয়ে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব ও সংসদ সচিবালয়কেও এ অনুলিপি পাঠানো হয়েছে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সমালোচনা

বদিউল আলম মজুমদার (Badiul Alam Majumdar) নেতৃত্বাধীন নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের অন্তত তিনটি সুপারিশ নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার নাসির উদ্দিন। বিশেষ করে, ইসি থেকে বিদায় নেওয়ার পর সংসদীয় স্থায়ী কমিটির হাতে তদন্তভার দেওয়ার এবং সীমানা পুননির্ধারণ ও ভোটার তালিকা সংক্রান্ত আলাদা কর্তৃপক্ষ গঠনের সুপারিশ ইসির স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ইসি সচিবের বক্তব্য

সোমবার ইসি সচিব আখতার আহমেদ জানান, মোট ৭-১০টি বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করে ঐকমত্য কমিশনে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, “আমাদের মতামত দেওয়ার কারণ হলো, এসব সুপারিশ কমিশনের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ণ করতে পারে। মতামত গ্রহণ করা বা না করার এখতিয়ার যাদের কাছে আছে, তারা সিদ্ধান্ত নেবেন।”


Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *