চট্টগ্রামের ইপিজেড থানা (EPZ Police Station) এলাকায় ফুটপাতের হকারদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগে জাতীয় নাগরিক কমিটি (National Citizens’ Committee) চট্টগ্রাম শাখার দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার রাতে বন্দরটিলা এলাকার একটি মার্কেটের সামনে থেকে স্থানীয় হকার ও সাধারণ মানুষ তাঁদের আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন আসাদুজ্জামান রাফি (Asaduzzaman Rafi) (২৭) এবং আবদুল কাদের ইমন (Abdul Kader Iman) (২৬)। জানা গেছে, আসাদুজ্জামান বাগেরহাট (Bagerhat) জেলার শরণখোলা (Sarankhola) উপজেলার এবং আবদুল কাদের ইমন নোয়াখালী (Noakhali) জেলার কবিরহাট (Kabirhat) উপজেলার বাসিন্দা।
অভিযোগ ও মামলার বিবরণ
ইপিজেড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইফতেখারুজ্জামান (Md. Iftekharuzzaman) আজকের পত্রিকাকে জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ে হকারদের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করার অভিযোগ রয়েছে। হকারদের অভিযোগ, কয়েকজন যুবক নিয়মিতভাবে চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। গত মঙ্গলবার হকারদের কাছ থেকে টাকা না পেয়ে তাঁদের ওপর চড়াও হন অভিযুক্তরা। পরে হকার এবং স্থানীয় জনগণ মিলে তাঁদের আটক করে পুলিশে খবর দেন।
এ ঘটনায় হকার মো. আজিম বাদী হয়ে ইপিজেড থানায় মামলা করেন। মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতরা কয়েকদিন ধরে ফুটপাতের হকারদের কাছ থেকে জোরপূর্বক চাঁদা নিচ্ছিলেন। মঙ্গলবার চাঁদার টাকা সময়মতো না পেয়ে তাঁরা হকারদের গালিগালাজ করেন এবং ৩০ হাজার টাকা দাবি করেন। আশপাশের লোকজন জড়ো হলে তাদের সঙ্গে থাকা আরও ৩-৪ জন পালিয়ে যায়। পুলিশ গ্রেপ্তার দেখিয়ে বুধবার আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।
জাতীয় নাগরিক কমিটির বক্তব্য
এ বিষয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নীলা আফরোজ (Neela Afroze) আজকের পত্রিকাকে জানান, “ঘটনার খবর পেয়ে আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানিয়েছি। যদি তদন্তে তাঁদের দোষ প্রমাণিত হয়, আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দলীয়ভাবে কোনো হস্তক্ষেপ করা হবে না।”
তিনি আরও বলেন, “সন্ত্রাসী বা চাঁদাবাজদের কোনো দলীয় পরিচয় নেই। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁদের সাংগঠনিকভাবে বহিষ্কার করা হবে।” নীলা আফরোজ উল্লেখ করেন, গত ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নাগরিক কমিটির ইপিজেড থানা কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়, যেখানে আসাদুজ্জামান রাফি এবং আবদুল কাদের ইমন সদস্য হিসেবে ছিলেন। এর মধ্যে এক সদস্যের বিরুদ্ধে আগে থেকেই অভিযোগ ছিল এবং পুনরায় এমন ঘটনা ঘটলে বহিষ্কারের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল।
তিনি আরও জানান, ঈদের পর কমিটির কার্যক্রম বিলুপ্ত করার সিদ্ধান্ত বিবেচনা করা হতে পারে।