বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহসম্পাদক রুমিন ফারহানা (Rumeen Farhana) সম্প্রতি এক টকশোতে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “উন্নয়ন, গণতন্ত্র, সংস্কার কিংবা নির্বাচন – এগুলোর মধ্যে কোনো বৈরিতা নেই।”
উন্নয়ন থেকে সংস্কারের দিকে পরিবর্তন
রুমিন ফারহানা বলেন, এক সময় হাসিনা (Hasina) নির্বাচনের মুখোমুখি উন্নয়নকে দাঁড় করিয়েছিলেন। কিন্তু বর্তমানে নির্বাচনের মুখোমুখি সংস্কারকে দাঁড় করানো হচ্ছে। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে যদি একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হয়, তাহলে বিএনপি (BNP) কে দূরে সরিয়ে রাখার কোনো উপায় নেই।”
নির্বাচনের সময় নিয়ে অনিশ্চয়তা
নির্বাচনের সময় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা তো পরিষ্কারভাবে বলেছেন, ডিসেম্বরেই নির্বাচন হবে। তবে তিনি আবার বলেছেন, মার্চে হতে পারে। এরপর বলা হচ্ছে, জুনেও হতে পারে। কিন্তু ২৬ জুন বর্ষাকাল। গত ৫৩ বছরে বাংলাদেশে কখনো বর্ষাকালে নির্বাচন হয়নি।”
মহাসড়কের দুরবস্থা তুলে ধরলেন
রুমিন ফারহানা ব্রাহ্মণবাড়িয়া (Brahmanbaria) ও সিলেট (Sylhet) মহাসড়কের দুরবস্থার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “বিশেষ করে আমার এলাকা, যেখানে রাস্তাঘাটের অবস্থা ভয়াবহ। এমন অবস্থায় নির্বাচন করা কঠিন। গরমের দিনে ছাতা নিয়ে বেরলে কিছুটা সুবিধা হয়, কিন্তু গ্রামে যারা থাকেন তাদের জন্য এটি বড় চ্যালেঞ্জ।”
ড. ইউনুসের মন্তব্য ও নির্বাচন সময় পরিবর্তনের সমালোচনা
তিনি আরও বলেন, “ড. মোহাম্মদ ইউনুস (Dr. Mohammad Yunus) এসব জানেন বলেই জুন মাসের কথা বলেছেন। সময় পরিবর্তন করে জনগণের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি করা হচ্ছে। কখনো ডিসেম্বর, কখনো মার্চ, কখনো জুন—এভাবে বারবার নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে।”
পুরনো রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের সঙ্গে তুলনা
রুমিন ফারহানা বলেন, “বাংলাদেশে দুটি প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব একে একে সরিয়ে নতুন নেতৃত্ব বসানোর প্রচেষ্টা ২০ বছর আগেও দেখা গেছে, ওয়ান ইলেভেনের সময়।”
তিনি আমেরিকান কূটনীতিক জন ড্যানিলোচ (John Danilovich) এবং আরও এক কূটনীতিকের বক্তব্য উল্লেখ করে জানান, তারা স্বীকার করেছেন ওয়ান ইলেভেনের সময় কিছু ভুল হয়েছে এবং সংস্কার সঠিকভাবে অনুসরণ করা হয়নি।
গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও সংস্কারের পারস্পরিক সম্পর্ক
তিনি বলেন, “উন্নয়ন, গণতন্ত্র, সংস্কার বা নির্বাচন—এগুলো একে অন্যের পরিপূরক। একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক সরকার এবং সংস্কার জনগণের কাছে জবাবদিহিতার সঙ্গে কার্যকর হয়। অনির্বাচিত সরকার কখনোই জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে পারে না।”