ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ
বাংলাদেশ বর্তমানে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূরাজনৈতিক অবস্থানে রয়েছে, যেখানে দেশটি বিশ্ব পরাশক্তিগুলোর মধ্যে ভারসাম্য রক্ষার চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। বিশেষ করে এশিয়ার দুই প্রধান শক্তি, চীন (China) এবং ভারত (India)—এই দুই দেশের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন ও ভারসাম্য রক্ষা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ভারতের সাথে সম্পর্ক অপরিহার্য
সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের আয়োজিত টকশোতে প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব অপূর্ব জাহাঙ্গীর (Apurba Jahangir) বলেন, ভারতের সাথে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক, ভৌগোলিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক রয়েছে, যা রক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি। তিনি আরও বলেন, “ভারতের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা ছাড়া বাংলাদেশের আর কোনো বিকল্প নেই। তেমনি ভারতের জন্যও বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন গুরুত্বপূর্ণ।”
চীনের সাথে অর্থনৈতিক ও কৌশলগত সম্পর্ক
অপূর্ব জাহাঙ্গীর মন্তব্য করেন, চীনের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক অর্থনৈতিক ও কৌশলগত দিক থেকে সুফল বয়ে আনতে পারে। তাই বাংলাদেশ উভয় দেশের সাথে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে আগ্রহী।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অবস্থান
তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কোনো রাজনৈতিক এজেন্ডা নেই। সরকারের লক্ষ্য হলো দেশের উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা। বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ইতিবাচক হয়েছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশের পাশে দাঁড়াচ্ছে। চীন, ভারত, পাকিস্তান (Pakistan)সহ বিভিন্ন দেশের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক সহযোগিতামূলক।
বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক ও ভারতের উদ্বেগ
অপূর্ব জাহাঙ্গীর উল্লেখ করেন, শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সম্পর্কে উন্নতি হয়েছে বলে কিছু পর্যবেক্ষক মনে করেন। এই সম্পর্কের অগ্রগতি ভারত গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। সম্প্রতি ভারতের সেনাপ্রধান বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। অপূর্ব জাহাঙ্গীরের মতে, এই উদ্বেগের পেছনে ভুল ব্যাখ্যা বা তথ্যের অভাব থাকতে পারে। বাংলাদেশ সব দেশের জন্য দরজা খোলা রেখেছে এবং বাস্তবতা দেখতে যে কেউ আসতে পারে।
সংস্কার প্রক্রিয়া ও বাকস্বাধীনতার প্রসঙ্গ
বর্তমান সরকার সাত মাসেরও বেশি সময় পার করেছে এবং সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। অপূর্ব জাহাঙ্গীর বলেন, সরকার কোনো নির্দিষ্ট মত চাপিয়ে দিচ্ছে না; বরং সব পক্ষের মতামত নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিতর্ক ও আলোচনা স্বাভাবিক বিষয় এবং এই প্রক্রিয়ায় দেশের গণতান্ত্রিক ও স্থিতিশীল পরিবেশ গড়ে উঠবে।
সরকারের অঙ্গীকার
সরকার বারবার বলেছে যে তারা কোনো সংস্কার চাপিয়ে দেবে না। বৃহৎ সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা চলমান এবং সরকারের লক্ষ্য হলো সকল পক্ষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে একটি গ্রহণযোগ্য সমাধানে পৌঁছানো।
সূত্র: ভিডিও লিংক