খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি রেজাউল হক (DIG Rezaul Haque) এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন, যা ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। তার আয়োজিত ইফতার মাহফিলে ‘সারপ্লাস বক্স’ রাখা হয়, যেখানে অতিথিরা তাদের অতিরিক্ত খাবার রাখতে পারেন। এই খাবার পরবর্তীতে এতিম ও দুস্থ শিশুদের মাঝে বিতরণ করা হয়।
ইফতার আয়োজনে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) জুলাই আন্দোলনের শহীদ পরিবারের সদস্য, সাংবাদিক ও বিশিষ্টজনদের সম্মানে খুলনা রেঞ্জ (Khulna Range) পুলিশের বাংলোতে এক ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেন ডিআইজি রেজাউল হক। সেখানে প্রতিটি ইফতার প্লেটের সামনে রাখা হয় খালি কৌটা, যার নাম দেওয়া হয় ‘সারপ্লাস বক্স’। কৌটার গায়ে লেখা ছিল— ‘প্রয়োজনে আপনার অতিরিক্ত খাবার সারপ্লাস বক্সে রাখুন’। অর্থাৎ, যে ব্যক্তি কোনো নির্দিষ্ট খাবার না খেলে বা কম খেলে, তিনি সেটি বক্সে রেখে দিতে পারেন, যা পরবর্তীতে এতিম ও দুস্থদের দেওয়া হবে।
অতিরিক্ত খাবার গেল এতিমখানায়
পরিকল্পনা অনুযায়ী, ৪০টি সারপ্লাস বক্সে প্রায় ১০০ শিশুর জন্য পর্যাপ্ত ইফতারি জমা পড়ে। ইফতার শেষে ডিআইজি রেজাউল হক (DIG Rezaul Haque) নিজেই তার গাড়িতে করে এই খাবার নিয়ে যান খুলনা সদর (Khulna Sadar) এলাকার একটি এতিমখানায়। সেখানে এতিম শিশুদের জন্য রাতের খাবারের ব্যবস্থা করা হয় এই ইফতার সামগ্রী দিয়ে।
সবার প্রশংসায় ভাসছে উদ্যোগটি
এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ খুলনার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। ইফতার মাহফিলে অংশ নেওয়া খুলনা জেলা ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (Khulna District Crime Reporters Association) সাধারণ সম্পাদক এবং দৈনিক যুগান্তরের ব্যুরো প্রধান আহমদ মুসা রঞ্জু বলেন, “এ ধরনের উদ্যোগ আগে দেখিনি। এটি নিঃসন্দেহে মহৎ একটি কাজ। খাবারের অপচয় রোধ করে এটি দরিদ্র মানুষের জন্য সহায়ক হবে।”
খুলনা প্রেস ক্লাব (Khulna Press Club) নির্বাহী কমিটির সদস্য ও একুশে টেলিভিশনের খুলনা প্রতিনিধি বলেন, “এই উদ্যোগ প্রতিদিনের ইফতার মাহফিলে চালু করা উচিত। এটি সবার জন্য অনুপ্রেরণা হতে পারে।”
ডিআইজির বক্তব্য
ডিআইজি রেজাউল হক বলেন, “অনেকেই ইফতারিতে কিছু কিছু খাবার খান না বা অপছন্দ করেন। সেক্ষেত্রে এই সারপ্লাস বক্সের মাধ্যমে সেই খাবারগুলো সংগ্রহ করে দরিদ্র ও এতিমদের দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে অনেকে ফোন করে এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। এটি ছড়িয়ে দিতে পারলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।”
এর আগেও ডিআইজি রেজাউল হক খুলনায় যোগদানের পর পুলিশ কর্মকর্তাদের বদলির জন্য লটারি পদ্ধতি চালু করে আলোচনায় আসেন। তার নতুন উদ্যোগটি আবারও সামাজিকভাবে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে।