ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে তৈরি হওয়া অনিশ্চয়তা ও রাজনৈতিক উত্তাপের মধ্যে আগামী ১৬ এপ্রিল প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস (Muhammad Yunus)-এর সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসছে বিএনপি (BNP)। বৈঠকে নির্বাচনকালীন সরকার ও নির্ধারিত সময়সূচি নিয়ে সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করতে আহ্বান জানাবে দলটি। রাজনৈতিক অঙ্গনে এই বৈঠককে ঘিরে তৈরি হয়েছে উত্তেজনা ও প্রত্যাশা—বিশেষ করে সরকারের বিভিন্ন উপদেষ্টার পরস্পরবিরোধী বক্তব্যে তৈরি বিভ্রান্তি দূর করা এখন বিএনপির অগ্রাধিকার।
দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা জানিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ চাইবে বিএনপি। একইসঙ্গে তারা বোঝার চেষ্টা করবে, নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার কোনো কৌশল সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া হচ্ছে কি না।
গত সপ্তাহে পরপর দুই দিন দুই উপদেষ্টার ভিন্নমতপূর্ণ বক্তব্যে বিএনপি ক্ষোভ প্রকাশ করে। তারা মনে করে, এসব বক্তব্য জনমনে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে এবং সরকারের অভ্যন্তরে একধরনের অস্পষ্টতা স্পষ্ট হয়ে উঠছে। এ প্রেক্ষিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির একাধিক বৈঠকে আলোচনা শেষে সিদ্ধান্ত হয়েছে, নির্বাচনী সময়সূচি নিয়ে সরকারের প্রকৃত অবস্থান জানতেই প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সরাসরি আলোচনা জরুরি। সেইমতো বৈঠকের সময় চেয়ে পাঠায় বিএনপি, যার প্রেক্ষিতে আগামী মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসার সময় দেন প্রধান উপদেষ্টা।
বৈঠকের একদিন পর, অর্থাৎ ১৭ এপ্রিল, সংস্কার ইস্যুতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় বসবে বিএনপি। এ দুটি বৈঠক শেষে সরকারের অবস্থান মূল্যায়ন করে পরবর্তী কর্মপন্থা নির্ধারণ করবে দলটি। বিএনপি এবং মিত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মতে, সরকার যদি এখনো সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা না করে, তাহলে আন্দোলন কর্মসূচি শুরু করা হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী (Amir Khasru Mahmud Chowdhury) সাংবাদিকদের বলেন, “১৬ তারিখের বৈঠকে কী হয়, সেটা আগে দেখা দরকার। তার পরেই আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারব পরবর্তী কর্মসূচি কী হবে। আন্দোলন একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত, যা নির্ভর করে নানা বিষয়ের ওপর।”
বিএনপির একাধিক নেতার মতে, যদি ১৬ এপ্রিলের বৈঠকে সরকারের পক্ষ থেকে ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন করার প্রতিশ্রুতি পাওয়া যায়, তাহলে তারা প্রস্তুতি গ্রহণে মনোযোগ দেবে। অন্যদিকে, যদি মনোভাবে নেতিবাচকতা থাকে, তাহলে রাজপথে কর্মসূচি জোরালো করা হবে।
জানা গেছে, দেশের প্রতিটি জেলা ও শহরে সমাবেশসহ অন্যান্য রাজনৈতিক কার্যক্রমের পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে, তবে সবকিছুই নির্ভর করছে ১৬ এপ্রিলের বৈঠকের ফলাফলের ওপর।