ঈদের মতো পবিত্র উপলক্ষে প্রথম আলোর প্রকাশিত এক কার্টুনে কুকুরের ছবি ব্যবহার করাকে কেন্দ্র করে নতুন করে বিতর্ক ছড়িয়েছে। এই ঘটনায় প্রথম আলোকে জাতির কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে বলেছেন ডা. শফিকুর রহমান (Dr. Shafiqur Rahman), যিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর (Bangladesh Jamaat-e-Islami) বর্তমান আমীর।
সোমবার দুপুরের পর নিজের ভ্যারিফায়েড ফেসবুক পেজে এক স্ট্যাটাসে ডা. শফিকুর রহমান লেখেন, “প্রথম আলো ঈদের মত একটি পবিত্র ইবাদাতকেও কটাক্ষ করতে দ্বিধা করে নাই।” তিনি জানান, ৩০ মার্চ প্রকাশিত পত্রিকাটির ঈদ শুভেচ্ছা কার্টুনে একটি কুকুরের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে, যা ঈদের গুরুত্ব ও ধর্মীয় আবেগকে অপমান করার শামিল।
ডা. শফিকুর রহমান তার স্ট্যাটাসে আরও উল্লেখ করেন, এই ধরণের মানসিকতা ও দৃষ্টিভঙ্গি অত্যন্ত “জঘন্য”। তিনি আরও বলেন, “এই অবমাননাকর আচরণ অবশ্যই প্রত্যাহার করতে হবে এবং জাতির কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।”
প্রথম আলো অতীতেও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অভিযোগে বিতর্কের মুখে পড়ে। ২০০৭ সালে পত্রিকাটির সম্পাদক মতিউর রহমান (Matiur Rahman) বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মাওলানা উবায়দুল হকের হাত ধরে প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা ও তওবা করেছিলেন। তখন মতিউর রহমান বলেছিলেন, ভবিষ্যতে আর এমন কিছু করবেন না যাতে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগে।
ডা. শফিকুর রহমানের পোস্টে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক সাড়া পড়ে। কিছুক্ষণের মধ্যেই পোস্টটিতে ২৩ হাজারেরও বেশি লাইক, চার হাজারের বেশি মন্তব্য এবং তিন হাজারের বেশি শেয়ার হয়।
মন্তব্যের ঘরে একজন লিখেছেন, “আপনাকে ধন্যবাদ প্রথম আলোর বিপক্ষে প্রতিবাদ করার জন্য।” অন্য এক জন বলেন, “সঠিক তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”
তবে এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় নতুন এক বিতর্কও জন্ম নেয়। আরিক হোসাইন নামের একজন মন্তব্য করেন, “আজকের দিনে জামায়াত আমীর বা তার দলের পক্ষ থেকে বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে কোনো বার্তা দেখিনি। অথচ ঈদের কার্টুন পোস্ট নিয়ে তিনি প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন। এটি কি পক্ষপাতমূলক মনোভাব নয়?”
তিনি আরও লেখেন, “এই দেশ শুধু মুসলমানদের নয়, শুধু বাঙালিদেরও নয়—এটি একটি বহুস্তরীয় জাতি। এই জাতির ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক উভয় ঐতিহ্যের প্রতিই যারা শ্রদ্ধাশীল, তারাই প্রকৃত নেতৃত্ব দিতে পারবেন।”
এই প্রেক্ষাপটে, ধর্ম ও সংস্কৃতি নিয়ে দায়বদ্ধতা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও দায়িত্ববোধ—এসব প্রশ্ন আবারো সামনে চলে এসেছে। প্রথম আলোর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য আসেনি।