ঘুষ চেয়ে সাধারণ মানুষের গরু আটকে রাখার অভিযোগে অবশেষে স্ট্যান্ড রিলিজ করা হয়েছে ওসি শহিদুর রহমান (Shahidur Rahman)-কে। ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্বে মাত্র পাঁচ মাস ছিলেন তিনি। এর মধ্যেই বিতর্কের কেন্দ্রে চলে আসেন শহরের সরকারপাড়ার বাসিন্দাদের ১৬টি গরু জব্দ এবং তিন লাখ টাকা ঘুষ দাবির ঘটনায়।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম (Sheikh Zahidul Islam)। তিনি জানান, রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি আমিনুল ইসলাম (Aminul Islam)-এর স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে শহিদুর রহমানকে ঠাকুরগাঁও সদর থানা থেকে স্ট্যান্ড রিলিজ করে আরআরএফ রংপুর (RRF Rangpur)-এ বদলি করা হয়েছে।
ওসি শহিদুর রহমানের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ ওঠে যখন জানা যায়, তিনি সরকারপাড়ার কয়েকজন বাসিন্দার ১৬টি গরু থানায় নিয়ে গিয়ে আটকে রাখেন। পরে গরু ফেরত দিতে তিন লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন বলে অভিযোগ ওঠে। টাকা না দিলে গরুগুলো ফেরত দেওয়া হবে না—এমন হুমকিও দেন বলে অভিযোগ। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, দীর্ঘ সময় আটকে রাখার ফলে ওই ১৬টি গরুর মধ্যে ৩টি গরু মারা যায়।
ঘটনার রেশ না কাটতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয় একটি ভিডিও, যেখানে ওসি শহিদুর রহমানকে একজন ভুক্তভোগীর কাছ থেকে টাকা নিতে দেখা যায়। এই ভিডিও ঘিরেও জনমনে ক্ষোভ তৈরি হয় এবং বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের মধ্যে আলোচনার ঝড় ওঠে।
জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে ওসিকে তাৎক্ষণিক স্ট্যান্ড রিলিজ করার সিদ্ধান্ত নেয়। পুলিশ সুপার শেখ জাহিদুল ইসলাম আরও জানান, চিঠি পাওয়ার পর শহিদুর রহমানকে তদন্তকাজ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং দ্রুতই ওই পদে নতুন কাউকে নিয়োগ দেওয়া হবে।
এই ঘটনা ঠাকুরগাঁওয়ে পুলিশি দুর্নীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। সামাজিক মাধ্যমে ন্যায়বিচারের দাবি উঠেছে। সাধারণ মানুষের আস্থা ফিরে পেতে এই ধরনের ঘটনায় কঠোর অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে স্থানীয়রা।